বিস্তৃত মাঠজুড়ে সবুজ ধানখেত। তার মাঝখানে একখণ্ড বেগুনি রঙের জমি। প্রথম দেখে মনে হতে পারে কোনো আগাছা বা বালাই আক্রান্ত ধানখেতের ছবি এটি। কিন্তু আসলে তা নয়। এটি একটি সজীব ধানখেত। সবুজ আর সোনালি ধান দেখে অভ্যস্ত আমাদের চোখে তাই বেগুনি ধানে ভ্রম হওয়াই স্বাভাবিক।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সোনালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি জমিতে চাষ করা হয়েছে এমনই বেগুনি রঙের ধান। এর পাতা, কান্ড সবই বেগুনি। এমনকি ধানে’র রঙ একই। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছে এর বেগুনি রঙের চাল বেশ সুস্বাদু।
চলতি বছরের বোরো মৌসুমে স্থানীয় কৃষক আক্তারুজ্জামান পাটোয়ারী বেগুনি রঙের ধানের আবাদ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সবার নজর কেড়েছে বেগুনি রঙের ধানখেত। অনেক কৃষকই আগ্রহ প্রকাশ করছেন এই ধান চাষে। তাদের অপেক্ষা ফলন দেখার।
শাহাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পথের পাশে বেগুনি রঙের ধানখেতটি নজর কাড়ছে পথচারীদের। অনেকে চলতে চলতে কৌতূহলী হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন খেতের পাশে। সবুজের মাঝখানে বেগুনি ধানখেত। বড় হয়ে ওঠা ধানগাছে এখন শীষ আসছে।
শুরুতে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে ২০-২৫ শতাংশ জমিতে এই ধানের আবাদ করেছেন আক্তারুজ্জামান। তিনি শুনেছেন তার আত্মীয় চীন থেকে এই ধানের বীজ সংগ্রহ করেছেন। আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মাত্র এক কেজি ধানবীজ দিয়ে চারা উৎপাদন করে জমিতে রোপণ করি। এখন পর্যন্ত ধানখেতের অবস্থা ভালো। গাছ থেকে ধানের ছড়া বের হতে শুরু করেছে। আশা করি অনুকূল আবহাওয়া থাকলে ভালো ফলন হবে।’
বেগুনি রঙের এই ধানখেতটি পর্যবেক্ষণ করেছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নূরে আলম। তিনি বলেন, এর ফলন কেমন হবে তা জানতে ধান কাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ফলন ভালো হলে ভবিষ্যতে এই ধানের আবাদ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি জাত নয় বলে জানান মো. নূরে আলম। দেশীয় শুক্রাণু প্রাণরস (জার্মপ্লাজম)। মাঠপর্যায়ের অবস্থা বিবেচনায় ধানটির জীবনকাল ১৪৫ থেকে ১৫৫ দিন এবং ফলন একরে ৫৫ থেকে ৬০ মণ, যা শতাংশে ২০ কেজি প্রায়। এই ধানের চাল বেগুনি ও সুস্বাদু বলে জানান তিনি।