সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্লেসমেন্ট শেয়ার অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ সন্ধায় স্টেইকহোল্ডারদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। বিষয়টি সানবিডিকে নিশ্চিত করেছেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন।
বৈঠকে অংশ নেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জর প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গরা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারের চলমান অবস্থা নিয়ে আজ (২৮ এপ্রিল) গণভবনে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থমন্ত্রণালয় ও বিএসইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। যেখানে পুঁজিবাজার নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই আলোকে আজকে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জরুরী সভা করে বিএসইসি। সভায় গণভবনের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
স্টেইকহোল্ডারদের বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন,পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নিয়ে যে সমস্যা আছে, তা গণভবনে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সমাধান করবেন বলে গভর্ণর জানিয়েছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে আইপিও ছাড়া ক্যাপিটাল রেইজিংয়ের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন লাগবে না। শুধুমাত্র প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন লাগবে। এক্ষেত্রে যেসব কোম্পানি ফিক্সড প্রাইসের আইপিও আনতে চাইবে তাদের ন্যূনতম ৫০ কোটি টাকা মার্কেট থেকে উত্তোলন করতে হবে। এছাড়া বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ন্যূনতম ১০০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলন করতে হবে।
মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, এখন থেকে প্লেসমেন্টর জন্য বিএসইসির অনুমোদন লাগবে না। কোম্পানি নিজেই প্লেসমেন্ট করতে পারবে। আর এই প্লেসমেন্টধারীরা কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হিসেবে থাকবে। এই শেয়ার ৩ বছরের জন্য লক-ইন থাকবে। আর এই ৩ বছর গননা শুরু হবে লেনদেন শুরু দিন থেকে।
তিনি বলেন, আজকের বৈঠকটি স্মরণকালের সবচেয়ে ভালো হয়েছে। আজকের বৈঠকে চেয়ারম্যান প্রস্তাবগুলো চুল-ছেড়া বিশ্লেষন করেছে। বাজারের উন্নয়নে তিনি সব বিষয়গুলো বিবেচনা করার কথা বলেছেন। আজকের এই আন্তরিক বৈঠকের জন্য তিনি তাকে (বিএসইসির) চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগের বৈঠকগুলোতে স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো-প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়ে বিএসইসির একটি কার্যকর নিয়ম তৈরি করা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট (আরআইইউ) বন্ধ করা, বন্ডের বাজার চালু করা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে সহজে বন্ড ইস্যুর সুযোগ দেওয়া,ব্রোকারহাউজগুলোর প্রধান কার্যালয়ের সম্প্রসারিত অফিস স্থাপনের সর্বোচ্চ দূরত্ব বাড়ানো,কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশের বেশি প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন না দেওয়া, স্ক্রিপ নেটিং, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনার ক্ষেত্রে বন্ড, ডিবেঞ্চার ও কৌশলগত বিনিয়োগকে বাইরে রাখা ইত্যাদি সুপারিশ করেন।