আসন্ন রমজান জুড়ে পণ্যের মান ঠিক রাখতে ইফতারসহ ২৯টি পণ্যের ওপর অভিযান চালাবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এসব অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসটিআই।
এর মধ্যে ঢাকায় তিনটি, ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে দুইটি এবং বিএসটিআইয়ের ১০টি আঞ্চলিক কার্যলয় থেকে ১০টি অভিযান চালানো হবে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান পরিচালিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে রাখতে গৃহীত বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এসব তথ্য জানান।
বিএসটিআইয়ের এসকল অভিযান তালিকায় আছে, মুড়ি, খেজুঁর, আম, সফট ড্রিঙ্ক পাউডার, কার্বনেটেড বেভারেজ, ফ্রুট সিরাপ, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্যতেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তরিত দুধ, নুডুলস, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট ও উৎপাদিত ইফতার সামগ্রী। এছাড়া, আমদানি করা পণ্যের ওপর রমজান মাস জুড়ে সার্ভিল্যান্স জোরদার করে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, রমজান মাসে ভেজালমুক্ত পণ্য সরবরাহ ও জনসচেতনতা বাড়াতে গত ২ মাসে ইফতার ও সেহরির সাথে সম্পৃক্ত খোলাবাজার থেকে ২৭ ধরণের খাদ্য পণ্যের ৪০৬টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। ৩১৩টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মানসম্মত পাওয়া গেছে ২৬১টি। ৫২ টি নিম্নমানের পণ্য হওয়ায় ওইসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৯৩টি নমুনা পরীক্ষাধীন রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই অনেক পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। যারা দাম বৃদ্ধি করেছে তারা তো এদেশেরই ব্যবসায়ী। এদের কেউ তো সৌদি আরব বা আমেরিকা থেকে আসেনি। রাতারাতি মোটা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে থাকে। দাম বাড়িয়ে দেওয়া এদেশের ব্যবসায়ীদের জাতীয় চরিত্রে পরিণত হয়েছে। দাম বাড়ানো প্রতিরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, মৌসুমী ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার প্রতিরোধে চলতি বছরে বাজার থেকে ২১০টি নমুনা সংগ্রহ করে ফরমালিনের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর একটিতেও ফরমালিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
এছাড়া ভেজাল প্রতিরোধে বিএসটিআইয়ের কার্যালয়ে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ০১৯৬৭৬১৩৬৭৪ ও ০১৯১৫৪৭৯৫৫৩ নম্বরে যে কেউ চাইলে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, রমজান মাসে চিনির কোনো সংকট নেই তাই দামও বাড়বে না। চাহিদার চেয়ে ৩/৪ গুন চিনি এই মুহূর্তে গুদামে মজুদ রয়েছে। পরে তিনি চিনি খাদ্য শিল্প ভবনে ভ্রাম্যমান চিনি বিক্রির দোকান উদ্বোধন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্প সচিব আবদুল হালিম, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসাইনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।