আসন্ন রোজাকে সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক মুরগির দাম ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমে। রোজা সামনে রেখে মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও শাক-সবজি ও মাছের দাম আগের মত চড়া রয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে নতুন করে বাড়েনি পেঁয়াজের দাম।
শুক্রবার (৩ মে) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৬৫ টাকা। গত সপ্তাহে ২১০-২২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগির দাম কমে ১৮০-১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আর পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৭০-২৮০ টাকা কেজি। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক ও লাল লেয়ার মুরগির দাম ৩০ টাকা কমেছে।
মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০-৫৫০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজি।
মুরগির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, প্রতিবছরের মার্চ-এপ্রিলে বয়লার মুরগির দাম বেড়ে যায়। এবারও বেড়েছে। তবে এবারের দাম বাড়ার প্রবণতা আগের থেকে বেশি ছিল। এখন দাম কমতে শুরু করেছে। সামনে আরও কমবে। কারণ রোজার সময় বয়লার মুরগির চাহিদা কম থাকে।
এ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে সব থেকে বেশি চলে বয়লার মুরগি। যে কারণে বয়লার মুরগির দাম বাড়া-কমার ওপরে অন্য মুরগির দাম নির্ভর করে। এখন বয়লার মুরগির দাম কমার কারণে পাকিস্তানি কক ও লাল মুরগির দামও কমেছে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আজিবর বলেন, মানুষের মধ্যে ধারণা বয়লার মুরগি গরম খাবার। রোজার সময় বয়লার মুরগি খেলে পেট খারাপ করতে পারে। এ কারণে রোজার সময় বয়লার মুরগির চাহিদা কম থাকে। ফলে দাম কমে যায়। রোজা শুরু হতে এক সপ্তাহও বাকি নেই। এ কারণে এখন মুরগির দাম কমছে। আমাদের ধারণা রোজায় বয়লার মুরগির দাম কমে ১২০ টাকায় চলে আসতে পারে।
এদিকে টানা দুই সপ্তাহ দাম কমার পর ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়। মুদি দোকানে ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়।
ডিমের পাশাপাশি অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ দাম। কারওয়ানবাজার গিয়ে যে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মত ভালোমানের দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি করছেন ১২৫-১৩০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি করছেন ৩০- ৩৫ টাকা।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছিল। তবে এ সপ্তাহের নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। আমাদের ধারণা রোজায় পেঁয়াজের দাম খুব বেশি বাড়বে না। কারণ এবার পেঁয়াজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই।
এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। শসা ৫০-৬০, বেগুন ৬০-৭০, পাকা টমেটো ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে পটল ৪০-৫০, সজনে ডাটা ৬০- ৮০, বরবটি ৬০-৭০, কচুর লতি ৭০-৮০, করলা ৬০-৭০, ধুন্দুল ৭০-৮০, গাজর ৩০-৪০, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দামও। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। এছাড়া পাঙাশ ১৫০-১৮০, রুই ২৮০-৬০০, পাবদা ৬০০-৭০০, টেংরা ৫০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি।