বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ট্রেজারি কার্যক্রম সন্তোষজনক ছিল। ট্রেজারি সংক্রান্ত বিভিন্ন সূচকগুলো যেমন লিকুইডিটি, ফরেন এক্সচেঞ্জ, এডি রেশিও, মূলধন সংরক্ষণ -এর ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগ ছিল সফল। যা ব্যাংকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেছে।
আজ সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ট্রেজারি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস. এম. মনিরুজ্জামান। আয়োজনের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে ঢাকার বিআইবিএমে অনুষ্ঠানটি স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক ড.শাহ মো. আহসান হাবীব। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএম-এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা; বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি; বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আলী হোসেন প্রধানীয়া; স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং হেড অব ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটস মুহিত রহমান; বিআইবিএম-এর অনুষদ সদস্য এবং সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম. বারিকুল্লাহ।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম-এর অধ্যাপক মো: নেহাল আহমেদ। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএম-এর লেকচারার রিফাত জামান সৌরভ; ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের হেড অব ট্রেজারি মেহেদী জামান এবং ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের হেড অব ট্রেজারি আরিকুল আরেফিন।
দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৫০ টি ব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হলেও ২০ টি ব্যাংক তথ্য সরবরাহ করেছে। এসব তথ্য থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যাংকের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার পাশাপাশি ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরণের প্রকাশনা, সার্কুলার ইত্যাদি সেকেন্ডারি তথ্যের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে ট্রেজারির সর্বশেষ আপডেট থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরদারী করতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আলী হোসেন প্রধানীয়া বলেন, ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাদের কলমানি মার্কেট সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। একই সঙ্গে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
বিআইবিএম-এর অনুষদ সদস্য এবং সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম. বারিকুল্লাহ বলেন, ট্রেজারি ধরে রাখা শুধু একটি নির্দিষ্ট বিভাগের কাজ নয়। ব্যাংক কর্মকর্তাদের আমানত সংগ্রহ এবং ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি ট্রেজারি ধরে রাখার জন্য কাজ করতে হবে।
স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং হেড অব ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটস মুহিত রহমান বলেন, চাহিদা এবং যোগানের ভিত্তিতে ট্রেজারি ঠিক রাখতে হবে। ট্রেজারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের দিকে নজর দিতে হবে।