৫২ প্রতিষ্ঠানের ভেজাল পণ্য প্রত্যাহারের নির্দেশনা চেয়ে রিট

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৫-০৯ ১২:৩২:৪৪


বিএসটিআই কর্তৃক ঘোষিত ৫২টি প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ও নিম্ন মানের  পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান।

দুপুরে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে।

এর আগে গত ৫ মে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর ৩১৩টি পণ্যের প্রতিবেদনে ৫২টি কোম্পানির ৫২টি পণ্য নিম্নমানের বলে জানায় বিএসটিআই।

বিএসটিআই জানায়, অচিরেই এসব পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিম্নমানের পণ্যের মধ্যে রয়েছে—

লাচ্ছা সেমাইয়ের ক্ষেত্রে- প্রাণ, মিষ্টিমেলা, মধুবন, মিঠাই, ওয়েল ফুড, কিরণ, জেদ্দা ও অমৃত ব্র্যান্ড বা কোম্পানির পণ্য নিম্নমানের।

হলুদ গুড়ার ক্ষেত্রে- প্রাণ, কাশেম ফুডের সান, ডেনিশ, ফ্রেস, ডলফিন ও মঞ্জিল ব্র্যান্ডের হলুদ গুড়া নিম্নমানের প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া প্রাণ ও ডেনিশের কারী পাউডারও নিম্নমানের প্রমাণিত হয়েছে।

সরিষার তেলের ক্ষেত্রে- সিটি অয়েল মিলের তীর, শবনব ভেজিটেবল অয়েলের পুষ্টি, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা ও গ্রিন ব্লিসিং ভেজিটেবল অয়েলের জিবি সরিষার তেল নিম্নমানের বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বিএসটিআই।

নিউজিল্যান্ড ডেইরির ডুডলী ব্র্যান্ডের নুডুলসও নিম্নমানের বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। এছাড়া এসিআই, মোল্লা, মধুমতি, দাদা সুপার, তিন তীর, মদিনা, স্টারশিপ, তাজ ও নুর স্পেশাল ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ নিম্নমানের বলে ল্যাব পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়।

রাজধানীর মিরপুরের বনলতা ঘি ও দক্ষিণ গোড়ানের বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, বিএসটিআই এর ল্যাব পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমাণিত হয়েছে।

পানির ক্ষেত্রে- আরা, আল সাফি, মিজান, মর্ণ ডিউ, ডানকান, আর আর ডিউ, দিঘী ব্র্যান্ডের পানিও নিম্নমানের। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মক্কা কোম্পানির চানাচুর, চট্টগ্রামের মেহেদী ব্র্যান্ডের বিস্কুট ও রুপসা ব্র্যান্ডের ফারমেন্টেড দই নিম্নমানের বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এরইমধ্যে সতর্ক করে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অচিরেই এসব কোম্পানিতে অভিযান চালানো হবে। এরপরেও যদি পণ্যের গুণগত মান ঠিক না করা হয় তবে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) প্রকৌশলী এস এম ইসহাক আলী।

ইসহাক আলী  বলেন, ‘রমজান মাসে সরিষার তেল, লবণ, হলুদ ও মরিচের গুড়া, লাচ্ছা সেমাই, ঘি ও দই বেশি ক্রয় করে সাধারণ মানুষ। এর বাইরে পানির প্রয়োজন হয়। এসব পণ্য নিম্নমানের হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করতে হয়েছে। আমরা কি খাই প্রতিদিন- এই চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। প্রতিবেদনের কপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’ অচিরেই এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পরিচালক।

তবে সয়াবিন তেলে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন পরিচালক এস এম ইসহাক আলী। তিনি বলেন, ‘গত বছর রমজানের আগে অনেক কোম্পানির সয়াবিন তেলও নিম্নমানের প্রমাণিত হয়েছিল। আমরা সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছিলাম। এরপর আবার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষা করার পর তা ভালো মানে উর্ত্তীণ হয়।’

এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন মাহমুদ বলেন, ‘আসন্ন রমজানে ক্রেতা সাধারণের ভোগ্যপণ্য যাতে মানসম্মত হয় সেজন্য এবার বিএসটিআই ঢাকায় প্রতিদিন তিনটি, ঢাকার আশেপাশে তিনটি ও ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ১০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে।’ এর বাইরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত ভেজালবিরোধী অভিযানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।