ভ্যাট ও কর জটিলতায় রয়েছে দেশের পোলট্রি শিল্প। এ সমস্যা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে এ খাতের উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি এই জটিলতার কারণে বাড়ছে পোলট্রি শিল্পের উৎপাদন ব্যয়ও। এ শিল্পের কাঁচামালের ওপর সৃষ্ট এ জটিলতা কাটাতে এরই মধ্যে প্রাণিসম্পদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে পোলট্রি শিল্পের কাঁচামালের উপকরণ থেকে অতিরিক্ত কর ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এ শিল্পের সংগঠন বিপিআইসিসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ পোলট্রি ফিড (খাবার) ফ্যাক্টরির উদ্যোক্তা কাঁচামালের উপকরণ ক্রয় করেন আমদানিকারকদের কাছ থেকে। কিন্তু চলতি বাজেটে এসব কাঁচামাল উপকরণে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাট ও কর ধার্য করা হয়। বিশেষ করে পোলট্রি ফিড উপকরণের ২৪টি ওপর ৫ শতাংশ ও একটি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া অগ্রিম ভ্যাট (এপিভি) ৪ শতাংশ হারে আরোপ করা হয়েছে ৩০টি পণ্যের ওপর। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে ট্রান্সপোর্ট ভ্যাট ধার্য করা আছে ৪৪টি পণ্যের ক্ষেত্রে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এসব ধার্যকৃত কর ও শুল্ক গিয়ে পড়ছে ফিড মিল মালিকদের ওপর। এতে তাদের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।
কর ও ভ্যাট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী বাজেটে নতুন করে কর ও ভ্যাটের হার বাড়ানো হবে না। করের হার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমানো হবে। নতুন আইনেও ভ্যাট হার বাড়বে না। তিনি আরও বলেন, শিল্প খাত সম্প্রসারণে সব ধরনের উদ্যোক্ত নেয়া হচ্ছে। কাউকে কষ্ট দিয়ে বা জোর করে করহার চাপিয়ে দেয়া হবে না।
জানা গেছে, পোলট্রি ও ফিস ফিডের অন্যতম উপকরণ ভুট্টার ওপর ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর বহাল আছে। এ পণ্যটি পোলট্রি শিল্পের ফিড তৈরি করতে ৬০ শতাংশের চাহিদা পূরণ করছে। অপরদিকে আরও একটি উপকরণ সয়াবিন অয়েল কেক আমদানির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ হারে রেগুলেটরি ডিউটি আরোপ করা হয়েছে। পোলট্রি ও ফিস ফিডের অপর একটি উপকরণ কাসাবা আমদানিতে ১৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি, ১০ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ এআইটি ও ৫ শতাংশ এটিভি বহাল আছে। এ উপকরণটি এ শিল্পের খাবার তৈরির অন্যতম একটি পণ্য। এছাড়া পাম কারনেল মিল আমদানিতে ৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি ও ৫ শতাংশ অগ্রিম ভ্যাট (এটিভি) প্রদান করতে হচ্ছে।
বিপিআইসিসি’র সহসভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পোলট্রি শিল্পের কাঁচামালের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ফলে প্রতি কেজি উপকরণের ওপর ক্ষেত্রবিশেষ ২৭ শতাংশ থেকে ৩১৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর আমাদের কোনো হাত নেই। এক্ষেত্রে আমাদের আমদানিনির্ভরতা কমাতে হবে। এজন্য দেশি ভুট্টা, সয়াবিন, ওষুধসহ অন্যান্য উপকরণ উৎপাদনে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে এ শিল্পের কাঁচামালের উপকরণ আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে।