স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও অধিদফতরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে,কোলগেট টুথপেস্টে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) সচিবালয়ে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে কোলগেট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক এইসব কথা বলেন ।
জাহিদ মালেক বলেন, সম্প্রতি টক্সিকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, কোলগেট টুথপেস্টে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এটি ব্যবহারে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে- এ সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, টুথপেস্ট একটি প্রসাধনী বা কসমেটিকস সামগ্রী। এটি আমদানি ও দেখভালের সাথে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআই জড়িত। এ কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয়, এর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওষুধ সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ থাকলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা যেমন- নিরাপদ খাদ্যের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, পানি দূষণের জন্য ওয়াসা, বায়ু দূষণের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় রয়েছে। টুথপেস্ট আমদানি ও মানসম্পন্ন কি-না তা দেখার এখতিয়ার শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআইয়ের।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায় এড়াতে পারে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
সব কিছু স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত হলেও সব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চাইলেও পালন করতে পারে না। তবে কোলগেট টুথপেস্টে কোনো ধরনের ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
কোলগেট বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত টুথপেস্ট। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়, কোলগেটে একটি ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হয়, যার নাম ট্রিকলোসা। এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং এই উপাদানের কারণে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
টক্সিকোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়,
অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ট্রিকলোসা ক্যান্সারের সেলের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। তবে এবারই প্রথম এ ধরনের তথ্য প্রকাশ পায়নি, এর আগেও এ ধরনের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেও বলা হয়, এ ধরনের উপাদান মানুষের শরীরে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
গবেষণায় উঠে আসে এটি মানুষের চামড়া ভেদ করে শরীরে প্রবেশের ক্ষমতা রয়েছে ট্রিকলোসা নামের এ রাসায়নিক উপাদানটির। এটি শরীরে ঢুকে বিভিন্ন হরমোন এবং বিভিন্ন গ্রন্থির স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে।
এ উপাদানটি রাসায়নিক শিল্পে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। লন্ড্রি ডিটারজেন্ট, বিভিন্ন পরিষ্কার সামগ্রী, ডিওডোরেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিকসে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। উপাদানটি ক্ষতিকারক কারণ এটি মানুষের ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করে রক্তে মিশে যেতে পারে। ফলে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
ট্রাইক্লোসানের এ ক্ষতিকর দিকটি সামনে আসার পরও কোলগেট তাদের টুথপেস্টে এই উপাদানের ব্যবহার বন্ধ করেনি। বরং তাদের দাবি, এই উপাদান মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। কানাডায় ইতোমধ্যে এই উপাদানের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।