ঈদের আর তিন-চার দিন বাকি। ঠিক আগ মুহূর্তে এসে পেঁয়াজের দামে ঈদের ছোঁয়া লেগেছে। দাম বাড়তে শুরু করেছে পণ্যটির। দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আমদানি করা ও দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬-৮ টাকা বেড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। একই সঙ্গে রোজার শুরুর দিকে পণ্যটির আমদানির গতিও শ্লথ ছিল। এসব কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে মৌসুমের শেষ দিকে এসে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে বাড়তে শুরু করেছে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম।
গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে ভারতের নাসিক ও পাটনা থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বেশি বিক্রি হতে দেখা যায়। বাজারে ভারতীয় সুখসাগর ও বেলেডাঙ্গা জাতের পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এদিন ভারতের নাসিক থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ১৯-২৪ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এর মধ্যে ভালো মানের পেঁয়াজটি কেজিপ্রতি ২৩-২৪ টাকায় বিক্রি হয়। মাঝারি ও কিছুটা নিম্নমানের (আকারে তুলনামূলক ছোট) নাসিক পেঁয়াজ কেজিপ্রতি যথাক্রমে ২০-২২ টাকা ও ১৯-২০ টাকায় বিক্রি হয়। রোজার শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নাসিক থেকে আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৭-১৮ টাকা এবং মাঝারি ও ছোট আকারের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসেবে পাইকারি বাজারে নাসিক থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৮ টাকা বেড়েছে।
রোজার শুরু থেকে খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে পাটনা থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২-১৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে পণ্যটির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজিপ্রতি ১৬-২০ টাকায়। সেই হিসাবে এ পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়েছে। কয়েক দিন ধরে এখানকার পাইকারি বাজারে ভারতীয় বেলেডাঙ্গা জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৪-১৬ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও পণ্যটি ১০-১২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
দেশে পেঁয়াজের চাহিদার বড় একটি অংশ ভারত থেকে আমদানি করে পূরণ করা হয়। বাকিটা নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে পূরণ হয়। বাজারে যখন দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তির দিকে থাকে, তখন পেঁয়াজের দাম কম থাকে। মৌসুমজুড়ে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় গত কয়েক মাস পণ্যটির দাম খুব একটা বাড়েনি। এমনকি রোজা শুরুর পরও পেঁয়াজের দামে স্থিতিশীলতা বজায় ছিল। তবে মৌসুমের একেবারে শেষ দিকে এসে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। একদিকে ঈদ সামনে রেখে বাড়তি চাহিদা, অন্যদিকে সরবরাহ ধীরে ধীরে কমে আসা—এ দুই কারণে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের।
এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জে কাঁচাপণ্যের বাজার হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, বর্তমানে এখানকার পাইকারি বাজারে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে। বেচাকেনা হচ্ছে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের। এ কারণে ঈদের আগেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের দাম। আগামী দিনগুলোয় দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনতে হলে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে হবে।