আবাসনের ভিত্তি মজবুদ করতে প্রয়োজন মানসম্মত রড

জেলা প্রতিনিধি আপডেট: ২০১৯-০৬-০৯ ১৯:৩৮:৪৮


নিজের থাকার জন্য স্থায়ী পাকা আবাসন কার না করতে মন চায়। নিরাপদ ভবিষ্যৎ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য গড়তে চায় সকলে। তাই  নিজের বাড়ি নির্মানে সচেতন ব্যাক্তিরা ভূল করতে চাননা কখনো। থাকার আবাসনটি হবে মনের মতো  এটিই থাকে সবার প্রত্যাশা। আর সেই আবাসনের ভিত্তি মজবুদ করতে সবার আগে যেটি প্রয়োজন সেটি হল মানসম্মত রড।

রড সিমেন্টের সম্পন্বয়ে গঠিত মজবুজ ভিত্তিই নিশ্চিত করে তার আবসনের নিরাপত্তা। কিন্তু সেই আবাসনের অন্যতম মূল কাচামাল রড এর দাম সমসময় যেন স্থির থাকতে চায়না।  কখনো  অদৃশ্য কারনে এর দাম হয়ে যায় আকাশচুম্বী। কখনোবা বিশ্ববাজারে রডের বিলেটের (কাঁচামালের) দাম বৃদ্ধি, দেশের টাকার অবমূল্যায়ন, উৎপাদন ও পরিবহন  খরচ, ব্যাংক সুদের হার  বৃদ্ধি, অদৃশ্য সিন্ডিকেট, ডলারের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে খরচ বৃদ্ধি প্রভৃতি লোকিক কারনে দাম বৃদ্ধির হিড়িক লেগে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রডের দামের এই সোনার হরিন নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

বন্দর নগরীর কর্ণেলহাট, অলংকার, জিইসি, ষোলশহর, চকবাজার, আগ্রাবাদ, ষোলশহর ২নং গেইট এলাকার বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা রডের বিক্রির দোকান সরেজমিনে পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় বিভিন্ন রডের কোম্পানি তাদের গুনগত মানের ভিত্তিতে বিভিন্ন রেটে বিক্রি করছেন। কারো অভিযোগ কেউ আগে খ্যাতি অর্জন করার কারনে তাদের রডের দাম বেশি কিন্তু গুণগত মানের  দিক দিয়ে প্রায় সব কোম্পানির রডের গুণগত মান সমান।

নিউ মনসুরাবাদে অবস্থিত মেসার্স মক্কা ট্রেডার্স এর  সত্ত্বাধিকারী মোঃ ঈসমাইল বলেন ঈদের পূর্বে রডের বেচাকেনা তুলনামূলক কম হয়।কারন ঈদের কারনে নির্মাণ শ্রমিকরা সবাই গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। ঈদের প্রায় ১৫দিন পর  রডের ব্যবসা আবার জকজমাট হতে পারে বলে তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন মিস্ত্রি শ্রমিকরা যতক্ষন থাকেন আমাদের ব্যবসা আছে। তারা নেই আমাদের ব্যবসায় ভাটা পড়ে।

জিইসির মোড় সংলগ্ন গরিবুল্লা শাহ মাজার এলাকায় মেসার্স ব্রাদার্স করর্পোরেশনের কর্মকর্তা জনাব প্রদিব বলেন চার থেকে পাঁচ মাস আগে জিপিএইচ ইস্পাতের দাম প্রায় ৬১০০০ ছিল বর্তমানে প্রায় ২০০০টাকার মত বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন ঈদের পর জিপিএইচ রডের দাম কমার সম্ভাবনা আছে।

পূর্ব নাসিরাবাদের সিডিএ এভিনিউতে অবস্থিত মেসার্স এম.ডি. নজরুল ট্রেডিং এর সত্তাধিকারী শিবু সেন বলেন রডের পাইকারি মূল্য উঠানামা করলে খুচরা মূল্যও কিছুটা এদিক সেদিক হয়। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্ঠা করি সুলভ মূল্যে ক্রেতারা যাতে রড কিনতে পারে।

আগ্রাবাদে কবির মঞ্জিলে রড কিনতে আসা ক্রেতা মো: মামুন সাহেব বলেন একটা দোকানে একটা বা দুটা কোম্পানির অধিক রড থাকেনা। একই দোকানে একসাথে বিএসআরএম, এসএএসএম, কেএসআরএম,একেএস,আরএসআরএম, বায়েজিদ স্টিল,জিপিএইচ ইস্পাত রড থাকেনা। একটার দাম জিজ্ঞেস করা গেলে অন্যটার দাম পাওয়া যায়না। বিক্রেতাদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন কোন  কোম্পানির সাথে ডিলারশীপ নিলে বিভিন্ন শর্ত করে দেয় যার কারনে সব কোম্পানির রড একসাথে রাখা যায়না। তারা আরও বলেন সব রড একসাথে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় স্থান সংকুলান হয়না যে কারনে তারা সব কোম্পানির  রড রাখেনা।

নগরীতে অধিক প্রচলিত কিছু রডের খুচরা মূল্য উল্লেখিত হল:

উল্লেখ্য যাতায়াত খরচ, লেবার খরচ, দূরত্ব বিবেচনায় মূল্য কম-বেশি বিবেচ্য।

বিএসআরএম-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬৫০০ থেকে ৬৬০০০ টাকার মধ্যে। কেএসআরএম-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬১৫০০ থেকে ৬২৫০০ টাকার মধ্যে।একেএস-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬২০০০ থেকে ৬৩০০০ টাকার মধ্যে। আরএসআরএম-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬২০০০ থেকে ৬৩০০০ টাকার মধ্যে।জিপিএইচ ইস্পাত-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬৩০০০ টাকার মধ্যে। বায়েজিদ স্টিল-(৬০-৭৫ ) গ্রেডের এম এস রড ৬১০০০ থেকে ৬২০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে সনাতনী (ম্যানুয়েল) কারখানায় উৎপাদিত রডের ব্যবহার দিন কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। কারন হিসেবে তারা নিরাপত্তা ঝুকির কথা উল্লেখ করেন।