পুকুরে ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য জমা করে পরিবেশ দূষণের অপরাধে চট্টগ্রামে এশিয়ান পেপার মিলস লিমিটেডকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর।
সোমবার (১০ জুন) পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসাইন এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নন্দীরহাটে ‘চিটাগাং এশিয়ান পেপার মিলস (প্রাইভেট) লিমিটেড’ কারখানাটি অবস্থিত। কারখানাটির মালিক তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি।
গত ২৭ মে পরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম কারখানাটি পরিদর্শন করে।
পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (কারিগরি) মুক্তাদির হাসান বলেন, ‘কারখানাটিতে তরল বর্জ্য শোধনাগার নেই। তাদের বর্জ্য সরাসরি বিভিন্ন খাল হয়ে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে গিয়ে পড়ছে। দূষণের কারণে হালদা নদীতে মাছের অবাধ বিচরণ হুমকির মধ্যে পড়েছে। সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে কারখানার ভেতরে প্রাকৃতিক পুকুরে তারা বর্জ্য জমা করে রাখছে। এটি করার কোনো অধিকার তাদের নেই। প্রাকৃতিক পুকুরে ফেলা বর্জ্যের কারণে আশপাশের জলাশয়ও দূষিত হচ্ছে।’
এশিয়ান পেপার মিলকে জরিমানার পাশাপাশি একমাসের মধ্যে ইটিপি স্থাপন ও রাসায়ানিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য প্রাকৃতিক পুকুরে জমা না করার অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুক্তাদির হাসান।
গত ২৫ মে রাতে হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। ডিম আহরণের বিষয়টি তদারক করতে গিয়ে পরদিন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন হালদা সংলগ্ন মাদারি খালে দূষিত পানি প্রবাহের বিষয়টি দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তের পর তিনি এশিয়ান পেপার মিলসের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে পরিবেশ অধিদফতরে চিঠি দেন। এরপর ২৭ মে পরিদর্শনে গিয়ে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষকে ১০ জুন শুনানিতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে গত ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সভায় এসে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার হালদা নদী দূষণের দায়ে এশিয়ান পেপার মিলসের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেয় পরিবেশ অধিদফতর। রাউজান উপজেলার ছাত্তারঘাট এলাকায় হালদা নদীর উভয় তীর সংরক্ষণ প্রকল্প পরিদর্শন উপলক্ষে স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল।