খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ খুঁজতে বিভিন্ন ব্যাংক পরিদর্শন

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-১৩ ১৫:০৭:৫২


বিভিন্ন ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ খুঁজতে এবার মাঠপর্যায়ে ব্যাংকের শাখাগুলো পরিদর্শনে নামছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকদল। যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে, মূলত সেসব ব্যাংকের শাখা এই পরিদর্শনের আওতায় আসছে। বিশেষ করে যেসব শাখায় খেলাপি ঋণ অতিমাত্রায় রয়েছে, কেবল সেসব শাখাই পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার উপায় নিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরুরি এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে খেলাপি ঋণ কমাতে একটি কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে এ রকম সাতটি ব্যাংককে ডাকা হয়। এর মধ্যে সরকারি চার ও বেসরকারি তিন ব্যাংক। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ এবং কমানোর উপায় নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান ও আহমেদ জামাল, নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এমডি ও ডিএমডি পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেসব ব্যাংকের শাখায় খেলাপি ঋণ তুলনামূলক বেশি, সেসব শাখা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কোন ব্যাংকের কোন কোন শাখা পরিদর্শন করা হবে সেটি নির্দিষ্টও করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই এ পরিদর্শন শুরু হবে। এ জন্য পরিদর্শন বিভাগগুলোর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কয়েকটি টিমও গঠন করা হয়েছে।

গত জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসেই নতুন করে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। সব মিলে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি সব খাতের ব্যাংকেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সরকারি খাতের ব্যাংকেই, যা নিয়ে বিব্রত সরকারের নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও। তাই এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডাকেন গভর্নর। ওই বৈঠকে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন অফসাইট সুপারভিশন, ব্যাংক পরিদর্শনে নিয়োজিত চার বিভাগ, ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস এবং ফিন্যানশিয়াল স্ট্যাবিলিটি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকরা।

খেলাপি ঋণ কেন বাড়ছে এবং কোন পদ্ধতিতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা যায়—এসব নিয়ে তারা সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করে দ্রুত গভর্নর বরাবর জমা দেবেন। মহাব্যবস্থাপকরা কমিটির সদস্য হলেও এসব বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রতিবেদন তৈরিতে সার্বিকভাবে সহায়তা করবেন। এ ছাড়া ওই বৈঠকে কমিটির প্রতিবেদন তৈরির কাজ সহজ করতে খেলাপি ঋণের আধিক্য বেশি এমন শাখাগুলো পরিদর্শনেরও সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে এ রকম কয়েকটি ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠক হয়েছে। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কেন বেড়েছে, পরবর্তী প্রান্তিকে কিভাবে কমাতে পারে—এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকটি বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।