আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে আগামী বাজেট ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ বড়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। বিশাল ঘাটতি মেটাতে এবার সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ২৭ হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশের সময় এই লক্ষ্যের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় তিনি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি হবে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মেটাতে জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকা। আর ব্যাংক থেকে সরকার ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নিতে চায়। এছাড়া বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৬৮ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি। এই সময়ে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৯ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা টাকা। এর ফলে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে যে পরিমাণ অর্থ ধার করার লক্ষ্য ধরেছিল, তার চেয়েও ৫২ শতাংশ বেশি নিয়েছে নয় মাসেই। অথচ এই খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।
অবশ্য সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে সরকারকে ১১ দশমিক শূন্য ৪ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে সাম্প্রতিক সময়ে টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলকসহ নানা কড়াকড়ি করা হলেও বিক্রি কমছে না।
সব মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারের মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। এসব ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধে বছরে বাজেটের একটা বড় অংশ ব্যয় করতে হচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৯৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।