মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই খাতে গত বছর বরাদ্দ ছিল ৮৮৪ কোটি টাকা। এ বছর তা দ্বিগুণ করে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে পরিচালন ও উন্নয়নে মোট ২ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা বেশি।
বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে গবেষণার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ সংশ্লিষ্ট চারটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর, এফফএমডি ও পিপিআর রোগ দমনে কার্যকর মডেলের সম্প্রসারণ, প্রাণিখাদ্য সংরক্ষণে ডোল পদ্ধতির সম্প্রসারণ, বিভিন্ন বিষয়ে ৩৫টি গবেষণা বাস্তবায়ন, তিনটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের কর্মপরিকল্পনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন হয়। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। বরাবরের মতো বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের রিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
শুরুতে দাঁড়িয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করলেও পরে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বিকেল ৪টার পর অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন সম্ভবপর না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাকি অংশ সংসদে উপস্থাপন করেন।
বেলা ৪টা ৪১ মিনিটে ‘প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হলো’ মর্মে ঘোষণা দেন স্পিকার।
প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
এর আগে মন্ত্রিসভা ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন দেয়। বাজেট ঘোষণার আগে দুপুর ১টার একটু পর জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা এ অনুমোদন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছর মূল বাজেটের আকার দাঁড়ায় চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় করতে না পারা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী বাজেটের আকার সংশোধিত বাজেট থেকে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি।