বৃটেনের বাজারে বাংলাদেশী কৃষিজাত পণ্য ও মসলার প্রচুর চাহিদা রয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন ইউকে বাংলাদেশে ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর চেয়ারম্যান ইকবাল ।
আজ সেমাবার (১৭ জুন) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ সফররত ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রতিনিধিদলের মধ্যকার নেটওয়ার্কিং সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি । ডিসিসিআই’র সভাপতি ওসামা তাসীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, ইউকে বাংলাদেশে ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই ডিবিএ এবং সভাপতি বজলুর রশিদ এমবিই উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর প্রতিনিধি দলরে সদস্যবৃন্দ কে বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার গত ৪৭বছরের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে এবং ২০১৮ সালে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪৩৭৭.৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় ৩৯৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং এর বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের মধ্যে তৃতীয় সর্বচ্চো। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ মুহুর্তে বাংলাদেশে প্রায় ২০০টির মত বৃটিশ কোম্পানী ব্যাংকিং, জ্বালানি, অবকাঠামো, কনসালটেন্সি, শিক্ষা প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ করেছে। তিনি বৃটেনের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে তৈরি পোষাক, জাহাজ নির্মাণ, ঔষধ শিল্প, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি, পুঁজিবাজার প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের পরিচালক ও কান্ট্রি কম্পিটিটিভনেস স্ট্যান্ডিং কমিটির সমন্বয়কারী পরিচালক বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্ভাবনার উপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কে আকর্ষণ করার জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করার পাশাপাশি কর সুবিধার পাশাপাশি ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদান করছে এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে আরো বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ইউকে বাংলাদেশে ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ বলেন, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ অত্যন্ত পরিশ্রমী ও উদ্যমী। তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বৃটেনে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি জানান, বাংলাদেশে উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য, ফলমূল প্রভৃতির বৃটেনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ইউকে বাংলাদেশে ক্যাটালিস্টস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সভাপতি সভাপতি বজলুর রশিদ বলেন, বর্তমানে প্রায় ২৪০টি বৃটিশ কোম্পানী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে এবং বাংলাদেশ বংশোদ্ভুত তরুণ বৃটিশ নাগরিকরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে অত্যন্ত আগ্রহী, যা খুবই আশাব্যঞ্জক একটি বিষয়। তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক আরো বৃদ্ধির জন্য ঢাকা চেম্বারের সাথে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। বজলুর রশিদ বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে বৃটেনে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ সুযোগে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের বৃটেনে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে বৃটেনে ১২০০০ রেষ্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে প্রতিবছর ৫ বিলিয়ন পাউন্ডের লেনদেন হয়ে থাকে এবং এ রেস্টুরেন্ট সমূহে বাংলাদেশে উৎপাদিত মসলার ও কৃষি পণ্যে রপ্তানির প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচালক এনামুল হক পাটোয়ারী, খন্দ. রাশেদুল আহসান, মোঃ রাশেদুল করিম মুন্না, পারটেক্স গ্রুপের পরিচালক শওকত আজিজ রাসেল, ইউকেবিসিসিআই’র পরিচলক ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, ফারজানা হোসাইন নিলা প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। আলোচকবৃন্দ বাংলাদেশিদের জন্য বৃটেনের ভিসা প্রাপ্তি সহজীকরণ এবং পাট ও পাটবহুমুখী খাতে আরো বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এসময় ডিসিসিআই পরিচালক আন্দালিব হাসান, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, ইঞ্জিঃ মোঃ আল আমিন, এস এম জিল্লুর রহমান এবং প্রতিনিধিদলের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/ এমএফইউ