প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে চীন সফর করবেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওই সফরে ঢাকার মূল ফোকাস থাকবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে। আর বেইজিং চাইবে ঢাকার কাছে কৌশলগত আস্থা অর্জন। ঢাকা-বেইজিং কূটনৈতিক সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সব ঠিক থাকলে আগামী ১ থেকে ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর করবেন। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের সরকার প্রধান শি জিনপিং বাংলাদেশ সফর করেন। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফর হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ফিরতি সফর।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১৬ সালে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং বাংলাদেশ সফরে আসলে দুই দেশের মধ্যে ২৬টি বিষয়ে চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং যৌথ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে ঢাকার পক্ষে মূল ফোকাস থাকবে ওই যৌথ ইশতেহারের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা।’
তিনি আরও জানান, ঢাকা চায় চীনের রাষ্ট্রপতির সফরে ঘোষণা দেওয়া প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত অর্থ ছাড় করুক বেইজিং। অন্যদিকে বেইজিং চায় দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে চীন যে কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়েছে তাতে ঢাকা পূর্ণ সমর্থন করুক। বড় বড় প্রকল্পসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে ঢাকা যেন চীনের ওপর শতভাগ নির্ভরশীল হয়। পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে ঢাকা বেইজিংয়ের পক্ষে থাকবে চীন এমন আস্থাও অর্জন করতে চায়।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা থাকবে মূল বিষয়। এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানেও প্রধানমন্ত্রী চীনের সহায়তা চাইবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুও সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চীন সবার আগে ঢাকার কৌশলগত আস্থা অর্জন করতে চায়। তারপর অর্থনৈতিক সহযোগিতা দৃঢ় হবে।’
অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের চীনবিষয়ক ডেস্কের এক কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তা চুক্তির বিষয় চূড়ান্ত হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ২০১৬ সালে চীনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরে আসলে দুই দেশের মধ্যে যে ২৬টি চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এগুলোর মধ্য থেকে ৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেইজিংকে ৫ দশমিক ২৪৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিল ঢাকা। ঢাকার প্রস্তাব ছিল- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় এই ৮টি প্রকল্পে ঋণসহায়তা বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হোক। জবাবে চীন ২টি প্রকল্পে ঋণসহায়তা দিতে রাজি হয়েছে।