মরণব্যাধি হিসেবে পরিচিত ক্যান্সার সবচেয়ে বিপজ্জনক একটি রোগ। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ওষুধ আবিষ্কার হয়নি যা দিয়ে ক্যান্সার পুরোপুরি ভালো করা সম্ভব। এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে কিন্তু একেবারে নিরাময় সম্ভব হয়নি।
ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কখনও জিন থেরাপি, আবার কখনও ইমিউনোথেরাপিতে আংশিক সাফল্য এসেছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে অল্প কিছুদিন সুস্থ রাখা গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই আবার নতুন করে ক্যান্সার আক্রমণ করেছে। এই রোগ কেমন আচরণ করবে, টিউমার সেল কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে তা কার্যত বলা অসম্ভব।
সম্প্রতি আমেরিকায় একটি গবেষণাগারে ক্যান্সার নিরাময়ের পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চলছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্যান্য সংক্রামক রোগের মতো টিকা দিয়েই মরণব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। মার্কিন বিজ্ঞানী স্টিফেন জনস্টোন বলেছেন, এক্ষেত্রে মাত্র ১০ শতাংশ সম্ভাবনাও যদি থেকে থাকে, তিনি সেই সুযোগ নিতে চান। সম্প্রতি তিনি ক্যান্সারের একটি টিকা তৈরি করেছেন। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এই টিকা দিয়ে ইতোমধ্যে কুকুরের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।
এই পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ৮০০টি পোষা কুকুর। তাদের মালিকদের অনুমতিতেই করা হচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। নানারকমের পরীক্ষা করে তাদের শরীরকে এই প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য প্রথমে তৈরি করা হয়েছে। তারপর তাদের এক এক করে এই টিকা দেয়া হবে।
এ বিষয়ে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এএসইউ বায়োডিজাইন ইনস্টিটিউটের স্টিফেন জনস্টন এবং ডুগ থ্যাম জানান, গত এক শতাব্দীতে শুধুমাত্র নানা রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ক্যান্সারের কথা আলাদা। এর প্রতিষেধক বের করা এতটা সহজ নয়।
কিন্তু এত প্রাণী থাকতে কুকুরের দেহে কেন হচ্ছে পরীক্ষা? এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কুকুর আর মানুষের পরিবেশ অনেকটাই এক। খাবার, ওষুধপত্র একই ধরণের। এমনকী মানুষ ও কুকুরের দেহে ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়ার ধরণও একইরকম। তাই কুকুরের উপর এই পরীক্ষা সফল হলে খুব সম্ভাবনা আছে যে মানুষের দেহেও এই প্রতিষেধক সফল হতে পারে। এমন আশার কথাই শুনিয়েছেন বিজ্ঞানী জনস্টোন এবং ডুগ থাম।