প্যারিস হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল যেখানে
আপডেট: ২০১৫-১১-১৫ ১৮:৪৮:৫১
প্যারিসের বাটাক্লঁ কনসার্ট হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির নম্বর প্লেট থেকে মিলেছে ওই হামলার সঙ্গে বেলজিয়ামের যোগসূত্র। পরবর্তীতে তিনজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সন্দেহকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনও নিশ্চিত নয়, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বেলজিয়ামে বসেই প্যারিসে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
দৃঢ় ভাবে বলা না গেলেও, গ্রেপ্তারি এবং বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ থেকে তদন্তকারীদের ধারণা বেলজিয়ামের আইএস সংগঠনের সঙ্গে বড় যোগসূত্র রয়েছে প্যারিস হামলার। ফ্রান্সের সঙ্গে এক যোগে এই হামলার তদন্ত চালাচ্ছে বেলজিয়াম, গ্রিস এবং জার্মানি।
হামলার পর বাটাক্লঁ থিয়েটারের সামনে পাওয়া যায় একটি ধূসর রঙের পোলো গাড়ি। এই গাড়ির ভিতর পাওয়া পার্কিং টিকিট দেখেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, গাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বেলজিয়ামে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার বেলজিয়ামের নম্বর প্লেটওয়ালা এই গাড়িতে চড়েই হামলা চালাতে আসে জঙ্গিরা। বেলজিয়ামে বসাবসকারী এক ব্যক্তি ভাড়া নেয় গাড়িটি। পুলিশের দাবির সত্যতা মেলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানেও।
বেলজিয়ামের প্লেট লাগানো এই গাড়িতে করেই কালো পাোশাকে তিন জনকে এসে হলের ভিতর ঢুকতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বেলজিয়ামের এক সংবাদ সংস্থার দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত তিন জনের আস্তানা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের মোলিনব্রিক এলাকা। এই শহর থেকে অনেকেই আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া এবং ইরাক পাড়ি দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে বেলজিয়াম পুলিশ। নিরাপত্তা জোরদার করা হয় ফ্রান্স-বেলজিয়াম সীমান্তে। হামলার পর বেলজিয়াম সীমান্তের কাছে একটি গাড়িতে কয়েক জনকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ।
গোয়েন্দাদের দাবি, এক ফরাসী ব্যক্তির নামে রেজিস্টার্ড গাড়িটি থেকে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্যারিসে হামলার জন্য গাড়িটি ব্যবহার করা হয় বলে সন্দেহ। সম্ভবত হামলার ঘটনার পর গাড়িটি মোলিনব্রিকে ফিরছিল। ধৃতেরা সকলেই ফরাসি নাগরিক। গ্রেপ্তারির কথা জানিয়েছেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী শার্ল মিশেলও।
পশ্চিম ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামকে ঘিরে আছে জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস এবং লুক্সেমবার্গ। বেলজিয়ামের নাগরিকদের মধ্যে ৪১ শতাংশই ফরাসি ভাষাভাষি। তাই তদন্তকারীদের সন্দেহ, অবস্থানগত এবং ভাষাগত সুবিধার কারণেই বেলজিয়ামকে নিরাপদ আস্তানা হিসেবে বেছে নিয়েছে জঙ্গিরা। ফ্রান্সের সীমান্তরেখা অত্যন্ত ছিদ্রবহুল। তাই এমনটা হতেই পারে, সহজ পথ হিসেবে বেলজিয়াম থেকে প্যারিসে এসে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
জানুয়ারি মাসে শার্লি হেবদো হামলার সময়ও বেলজিয়াম থেকে অস্ত্র আনা হয়েছিল বলে পরে জানতে পেরেছে ফরাসি প্রশাসন।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ