রাজধানীতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে স্বর্ণ মেলা। প্রায় ১২০০ ব্যবসায়ী ১৭৫ কোটি টাকার কর দিয়ে তাদের সোনা, রুপা ও হীরা বৈধ করে নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম দিনে ২৪ কোটি টাকা, দ্বিতীয় দিনে ২৬ কোটি টাকা এবং শেষ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২২ কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে। গত রবিবার শুরু হওয়া এ মেলা শেষ হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়ালা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মেলায় শুধু ঢাকা বিভাগে ১৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময় প্রায় ১২০০ প্রতিষ্ঠান কর দিয়ে তাদের সোনা, রুপা বৈধ করেছে।
এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা কর দিয়ে সোনা বৈধ করতে পারবেন। আমাদের প্রত্যাশা এ সময়ে কর আদায় ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’
এই মেলা রাজধানী ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলসহ দেশের আটটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআরের আয়োজনে এ মেলার সার্বিক সহযোগিতা করে সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুস।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দেশের স্বর্ণ কারিগরদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনাদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এমন গয়না তৈরি করুন, ক্রেতারা যেন কলকাতামুখী না হয়। আমাদের অনেক ধনী মানুষ আছে কলকাতা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর থেকে সোনার গহনা কেনে। আমাদের দেশে অনেক দক্ষ কারিগর রয়েছে তাদের হাতের কাজ অনেক সুন্দর। তারা যদি ভালো মানের গয়না তৈরি করতে পারে তাহলে ধনীরা আর গয়নার জন্য বিদেশমুখী হবে না।
স্বর্ণ কারিগরদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারিগরদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন খুব দরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকার আশপাশে একটি জুয়েলারি পল্লী স্থাপনের জন্য জমি ও আধুনিক জুয়েলারি ইনস্টিটিউট তৈরিতে সহযোগিতা করব। আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যানও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে জমি বরাদ্দের জন্য চিঠি দেবে বলে জানান।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য (আয়কর) কানন কুমার রায়, বাজুসের সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার। এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি ভরি সোনায় এক হাজার টাকা, রুপায় ৫০ টাকা ও প্রতি ক্যারেট হীরায় ছয় হাজার টাকা কর দিয়ে অপ্রদর্শিত সোনা, রুপা বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। মেলা শেষ হলেও আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ কর অঞ্চলে গিয়ে মজুদ সোনা কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ পাবেন।
সানবিডি/ এমএফইউ