স্থায়ীত্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বলা হয়েছে এসডিজি অর্জনে তৃনমূল মানুষকে উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে হবে। শুধুমাত্র একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এলক্ষ্যে সুষম বন্টন নিশ্চিত করে আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা প্রয়োজন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭জুন) রাজধানীর গুলশানে সিপিডি আয়োজিত ‘এসডিজি অর্জনে কি ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চা প্রয়োজন’? শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালয়নায় আলোচনায় অংশ নেন, সংস্থাটির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ড. রিনি হলেনস্ট্রিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান, ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুইস লেখক পিটার নিগিলি। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, এসডিজির মোট ১৭ অভীষ্টের মধ্যে প্রধান ছয়টি বাস্তবায়নে ৬৮টি লক্ষ্য ও ৯৫টি সূচক বেঁধে দেয়া হলেও বেশ কিছু লক্ষ্য ও সূচকে অগ্রগতির তথ্য বাংলাদেশে নেই। তবে শিক্ষা, শোভন কর্ম, অসমতা, জলবায়ু, শান্তি ও ন্যায়বিচার এবং উন্নয়ন অংশিদারিত্বসংক্রান্ত ছয় অভীষ্টের মাত্র ৩৮টি লক্ষ্য ও ৫০টি সূচকের অগ্রগতির সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে।
এতে বলা হয়, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে হলে একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। উন্নয়ন যেন সর্বক্ষেত্রে হয় এবং দেশের প্রতিটি মানুষ যেন এ থেকে সুবিধা পেতে পারে। গত কয়েক বছরে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার হার ১৯৯৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩০ শতাংশ বেড়েছে। সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাস্তবায়নকালের তুলনায় এসডিজি সময়কালে শিক্ষার হার বেড়েছে। তবে শিক্ষা সমাপ্তি, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভূক্তি, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ, প্রযুক্তি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করার মতো সূচকে আরও উন্নতি করতে হবে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেকোন দেশের উন্নয়নের জন্য প্রত্যেকটি মানুষকে জাতীয় কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। এছাড়া উন্নয়ন টেকসই হবে না। তিনি বলেন, ধনী গরিবের বৈষম্য যেন বৃদ্ধি না পায় সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।
সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, যা কিছুই করি না কেন আমাদের পরিবেশের দিকেও নজর দিতে হবে। তা না হলে পরিবেশ আমাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ শুরু করবে। টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এটিও একটি অন্যতম দিক। কার্বন উৎপন্ন হয় এমন যানবাহন এবং কলকারখানায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকরের বেশ কয়েকটি ভিশন ও মিশন রয়েছে। এর মধ্যে এসডিজি একটি। এমডিজির মতো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজিও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আগামী বাজেটেও দেশের প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য বেশকিছু কর্মসূচী রাখা হয়েছে। এছাড়া সরকার আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে শহরের মতো গ্রামের মানুষের সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত হবে। মানুষের আয় বৈষম্য যাতে কমে আসে সেজন্য কাজ করা হচ্ছে। পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষায় আওতায় সেবা দেয়া হচ্ছে। এ কারণে দ্রুত দেশে দারিদ্র্যতা হ্রাস পাচ্ছে।
সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাতে প্রান্তিক জনগণের উন্নয়নের কথা খুব কম। মাত্র তিন মিনিট হয় গরীব মানুষের কথা বাকি সবসময় জুড়ে অন্যান্য আলোচনায় ব্যস্ত থাকে সংসদ।
সানবিডি/ এমএফইউ