পবিত্র ঈদ উল ফিতরের পর পাইকারি বাজারগুলোকে আস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল মসলাপণ্য আদা ও রসুনের দাম। দাম বৃদ্ধির এ ধারা গত সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তবে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এখন আবার কমতে শুরু করেছে আদা-রসুনের দাম।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের বুকিং দর কমায় দেশীয় বাজারে আদা ও রসুনের আমদানি বেড়ে গেছে। সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে পণ্য দুটির দামও এখন নিম্নমুখী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে চীন থেকে আমদানীকৃত আদা প্রতি কেজি ৯৮-১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে , যা গত সপ্তাহেও ১৪০-১৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চীন থেকে আমদানীকৃত রসুনের দাম বেশ কমেছে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চীনা রসুন ১০৫-১১০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহে আগেও ১২০-১২৫ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল।
পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বর্তমানে দেশী রসুনের সরবরাহ খুবই কম। এর মধ্যে বাজারে প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। তবে দেশী আদার সরবরাহ ও বিক্রি নেই বললেই চলে।
খাতুনগঞ্জের কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের পর থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত পাইকারি বাজারে আদা-রসুনের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। আমদানি কম হওয়ায় ওই সময় পণ্য দুটির দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পণ্য দুটির সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি থাকায় দাম কমেছে।
খাতুনগঞ্জের কাঁচাপণ্যের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ লোকমান বলেন, এক-দেড় মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে রসুন ও আদার বুকিং দর আগের চেয়ে কমেছে। এ সুযোগে বাড়তি লাভের আশায় দেশীয় আমদানিকারকরা পণ্য দুটির আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়তি আমদানিতে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়লেও বিক্রি আগের চেয়ে অনেক কম। ফলে দামও কমতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহে পণ্য দুটির দাম কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
অন্যদিকে পাইকারি বাজারের প্রভাবে খুচরা বাজারেও কিছুটা কমেছে আদা ও রসুনের দাম। গতকাল চট্টগ্রামের বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা ১২৫-১৩০ ও রসুন ১৩৫-১৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। যদিও তিন-চারদিন আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা ১৭০-১৮০ ও রসুন ১৬০-১৭০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, একসময় পেঁয়াজ, রসুন ও আদার সিংহভাগ চাহিদা মেটানো হতো দেশে উৎপাদিত পণ্য দিয়ে। কিন্তু বছরের পর বছর এ তিন পণ্যে আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। দেশীয় পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, বাজারজাত ও সরবরাহকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদূরপ্রসারী কোনো চিন্তা না থাকায় এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলাপণ্যের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাজার দখল করছে আমদানীকৃত পণ্য।