১০ রানে রোহিত শর্মার ক্যাচ মিসের মাশুল দিতে হলো শেষ পর্যন্ত। রোহিত শর্মা করলেন সেঞ্চুরি এবং ৩০০ প্লাস রান করলো ভারত। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৩১৫ রানের লক্ষ্য দিলো ভারত। সাথে স্বস্তিদায়ক মোস্তাফিজের ৫ উইকেট।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মার সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে ভারত। ৭৭ রান করেন অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল। মোস্তাফিজুর রহমান একাই নেন ৫ উইকেট।
এক ওভারেই বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পান্ডিয়াকে ফিরিয়ে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের ৩৯তম ওভারেই পরপর বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পান্ডিয়াকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিলেন বাংলাদেশ দলের এই কাটার মাস্টার।
৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজকে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু তার কাটারের কাছেই পরাস্ত হন কোহলি। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন রুবেল হোসেন। তবে অসাধারণ এক ভঙিতে ক্যাচটি ধরলেন রুবেল। ২৭ বলে ২৬ রান করে ফিরলেন কোহলি।
এক বল বিরতি দিয়ে আবারও উইকেট। এবারের উইকেটটি ছিল সত্যিই অসাধারণ। হঠাৎই প্রথম স্লিপে সৌম্য সরকারকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। বলটাকে আউটসুইঙ্গার করিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। তাতেই ব্যাটের কানায় লাগিয়ে প্রথম স্লিপে বল ফেলেন পান্ডিয়া। সেটাকেই ঝাঁপিয়ে পড়ে তালুবন্দী করে নেন সৌম্য। ২ বল কেলে কোনো রানই করতে পারেননি পান্ডিয়া।
সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মাকে তুলে নেয়ার পর বেশিক্ষণ আর অপেক্ষা করতে হয়নি। তার সঙ্গী লোকেশ রাহুলকেও অসাধারণ এক ডেলিভারিতে তুলে নিলেন বাংলাদেশ দলের পেসার রুবেল হোসেন।
তার অসাধারণ সেই ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় বল লাগিয়ে উেইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লোকেশ। মুশফিকের নেয়া ক্যাচটাও ছিল দুর্দান্ত। ৯২ বলে ৭৭ রান করে ফেরেন লোকেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশ বোলারদের দারুণ ইকোনোমিক্যাল বোলিংয়ের মুখোমুখি হন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। যার দরুণ, ৫ম ওভারেই আউট হতে পারতেন রোহিত শর্মা। ১০ রানের মাথায় ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তামিম ইকবাল দৌড়ে এসে ক্যাচটা হাতের তালুতে নিয়েও ছেড়ে দেন।
যার ফলে ১০ রানে জীবন পেয়ে যান রোহিত। আর কে না জানে, রোহিত ক্যারিয়ারে ব্যাট করতে নেমে যতবারই জীবন পেয়েছিলেন, প্রায় ততবারেই সেটাকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করেছেন। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। ১০ রানে তামিমের হাত ফসকে ক্যাচ পড়ে যাওয়ার পর সেঞ্চুরিই করলেন রোহিত শর্মা।
৯০ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কায় সেঞ্চুরি করার পর ৯২ বলে ১০৪ রান করে অকেশনাল বোলার সৌম্যকে উইকেট দিয়ে ফেরেন রোহিত। ৩০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সৌম্যর অফ কাটারে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে লফটেড ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন রোহিত। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা লিটন দাস দাঁড়িয়ে থেকে অনায়াসেই ক্যাচটি ধরে ফেলেন।
৩৩তম ওভারে উইকেট দিলেন লোকেশ রাহুল। রুবেল হোসেনের করা ওভারের ৪র্থ বলটি ছিল হালকা আউট সুইঙ্গার। যেটাকে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় বল লাগিয়ে দেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই ক্যাচ তালুবন্দী করে নেন মুশফিক।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বাংলাদেশের বোলাররা শুরুটা তেমন খারাপ করেননি। বেশ দেখেশুনে খেলতে হয়েছে ভারতেরও। এসেছিল সুযোগ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের ঘটনা। মোস্তাফিজুর রহমানের শর্ট ডেলিভারিটি স্কয়ার লেগের দিকে উড়িয়ে মেরেছিলেন রোহিত শর্মা। দৌড়ে গিয়ে সেটি একদম হাতে পেয়ে যান তামিম। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ফেলে দেন।
কিন্তু রোহিত শর্মাকে জীবন দেয়ার মাশুলই গুনতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ভারতীয় ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই আউট হতে বসেছিলেন রোহিত। তামিম ইকবাল সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। এরপর থেকে দুই ওপেনার বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট চালিয়ে যান এবং ১৮০ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন।