অর্থবছর ২০১৯-২০ বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী হলে কিন্তু তা সময়োপযোগী বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ।
আজ বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর বাংলামোটরে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন-সমুন্বয়ের প্রধান কার্যালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, চলতি বছরের মেয়াদকালে অর্থাৎ অর্থবছর ২০১৯-২০ বাজেট এর আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা । বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ বাজেট । এবারের বাজেট এর লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী হলেও এটি সময়োপযোগী ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এছাড়া ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করেছে এটি অবশ্যই উন্নয়নকে সহযোগিতা করবে ।
তিনি আরও বলেন, সরকার সামাজিক সুরক্ষাখাতে নজর দিয়েছে এছাড়া তরুণদের জন্য ১০০ কোটি টাকা বাজেট রেখেছে যা সরকারের সদিচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে ।
ড. আতিউর রহমান বলেন, আমরা গরীব ও প্রান্তিক কৃষককে বাদ দিয়ে উন্নয়ন করতে চাইনা । এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও গরীব এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছে । এছাড়া চলতি অর্থবছরে কৃষকদের জন্য বেশ প্রণোদনা রাখার কথাটিও তিনি উল্লেক করেন ।
তিনি বলেন, এসএমই খাতে অগ্রাধিকার দিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের শো রুমের কর মওকুফ করছে সরকার যা নারীদের উন্নয়নের পথ প্রদর্শক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন ।
স্মার্টফোন আমদানীর ওপর শুল্ক বৃদ্ধির কারন হিসেবে আতিউর রহমান বলেন, দেশের উৎপাদিত মোবাইল ফোনের কথা বিবেচনা করেই সরকার মোবাইল ফোন আমদানীর ওপর শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে । যা দেশের প্রযুক্তি খাত কে এগিয়ে নিবে এবং শিক্ষিত তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান হবে ।
তবে তিনি এসময় মোবাইলে টকটাইম সিমের ওপর বাড়তি কর প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান ।
বাজেটে সবার জন্য স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে জাতীয় বাজেটে মোট ১০ শতাংশ রাখা উচিত যা আমাদের রাখা হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ । সরকার এই ব্যাপারটি আরও একটি ভেবে দেখার দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি ।
তিনি বলেন, আর্থিক খাত ও ব্যাংক খাত কে রক্ষা করার জন্য ঋণখেলাপীদের হাত থেকে ব্যাংকে বাঁচাতে আইনের সংস্কার করা দরকার ।
পুঁজিবাজারের বাজেটে শেষ মুহুর্তে সংশোধনী সম্পর্কে তিনি বলেন,এই সংশোধনী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বার্থে এটি সরকারের ভালো উদ্যোগ । এতে অকারনে বোনাস দেয়ার প্রবনতা কমবে । তবে কোম্পাণীগুলো যেন বিশেষ কোন কারসাজি না করে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিল ব্যাংকগুলোকে ৩০শতাংশ লভ্যাংশ করে না দিলে তারা দ্বৈত করের গ্যারাকলে পড়বে ।প্রতিষ্ঠানগুলা দ্বৈত করের মাঝে পড়লে তারা পুঁজিবাজার থেকে সরে আসবে । এই যায়গা গুলো সাবধান থাকতে হবে । তাই বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাঝে সমন্ময় থাকতে হবে ।
ড. আতিউর রহমান বলেন, ২০৩০ সালে দেশের অর্থনীতির আকার ৭শত বিলিয়ন ডলার ছেড়ে যাবে । যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে ।
তিনি বলেন, বর্তমানে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারটি সরকার পুনরায় বিবেচনা করতে পারেন । না হয় মধ্যবিত্ত ও নিম্মমধ্যভিত্তের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে ।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কে,এম, জমসেদ উজ জামান এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন আহম্মেদ প্রপেসর ড. এ কে এনামুল হক বিইউআইএলডি সিইও ফেরদৌস আরা বেগম ডব্লিইএ এর প্রেসিডেন্ট নিলুফার আহম্মেদ করিম সহ প্রমুখ ।
সানবিডি/ এমএফইউ