প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের ব্যাংকে হিসাব খুলে সেখানে বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত রাখতে পারেন। এসব হিসাবকে বলা হয় 'নন রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট'। এতদিন এ ধরনের হিসাবের সুদের ওপরে কোনো ধরনের কর ছিল না। তবে এখন থেকে এমন অ্যাকাউন্টের আমানতের সুদের ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর দিতে হবে সরকারকে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২৩ জুন এক প্রজ্ঞাপনে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে এনবিআরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নির্দেশনা দিয়েছে। ১৯৮২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ ধরনের হিসাব থেকে কর নেওয়া বন্ধ রেখেছে এনবিআর। এবার সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে উৎসে কর আরোপ করা হলো। দেশে বসবাসকারী নাগরিকদের আমানতের সুদের ওপর এনবিআর ১০ ও ১৫ শতাংশ উৎসে কর নিয়ে থাকে। আমানতকারীদের টিআইএন থাকলে ১০ শতাংশ এবং টিআইএন না থাকলে ১৫ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়।
এদিকে বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একদিকে প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহ দেওয়া, অন্যদিকে প্রবাসীদের বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবের আয়ে করারোপ করাকে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা।
বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রবাসীরা যাতে নিজের অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা ও উত্তোলন করতে পারেন, সেজন্য 'নন রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট' খোলা ও পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ হিসাবের মাধ্যমে অনেক প্রবাসী দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন এবং নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির আইপিওতে অংশ নেন। উৎসে কর আরোপ করা হলে এ ধরনের হিসাব পরিচালনায় প্রবাসীরা নিরুৎসাহিত হতে পারেন।
এদিকে অপর এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা আন্তর্জাতিক কার্ডের (ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড) মাধ্যমে বিদেশে চিকিৎসা বাবদ কী পরিমাণ অর্থ যাচ্ছে সেটির তথ্য মাসিক ভিত্তিতে জানানোর নির্দেশনা দিয়েছে। চিকিৎসা বাবদ আন্তর্জাতিক কার্ডে একজন একবারে ১০ হাজার ডলার ব্যয় করতে পারেন। ভ্রমণ, রাষ্ট্রীয় ও ব্যবসায়িক সফর কিংবা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক কার্ডে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও আলাদা সীমা নির্ধারণ করা আছে।