মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, পারস্য উপসাগরে কয়েকটি ইরানি বোট একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাঙ্কারকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে ।
বুধবার পারস্য উপসাগরে ইরানি জলসীমার কাছে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ওই কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, হরমুজ প্রণালীর উত্তর দিকের প্রবেশ মুখে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর বলে ধারণা করা পাঁচটি বোট তেলবাহী জাহাজ ব্রিটিশ হ্যারিটেজকে থামতে বলে, কিন্তু একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ তাদের সতর্ক করলে তারা সরে পড়ে।
“সেখানে থাকা রাজকীয় নৌবাহিনীর এইচএমএস মন্ট্রোজ (যুদ্ধজাহাজ) তাদের বন্দুকগুলো ওই বোটগুলোর দিকে তাক করে রেডিও মারফত তাদের সতর্ক করে, এরপর তারা সেখান থেকে চলে যায়,” বলেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
“এটি হয়রানি এবং ওই প্রণালীতে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা,” বলেছেন আরেক মার্কিন কর্মকর্তা।
তাৎক্ষণিকভাবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত সপ্তাহে জিব্রাল্টার উপকূলে ব্রিটিশ রাজকীয় মেরিন ইরানি সুপার-ট্যাঙ্কার গ্রেস ১ জব্দ করার প্রায় এক সপ্তাহ পর এ ঘটনাটি ঘটল।ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ওই ট্যাঙ্কারটি ইরান থেকে সিরিয়ায় অশোধিত তেল নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহে সেটি আটক করে তারা।
এই ট্যাঙ্কার আটকের ঘটনায় ব্রিটেনকে ‘পরিণতি’ ভোগ করতে হতে পারে বলে বুধবার সকালে হুঁশিয়ার করেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
ইরানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করে দেশটির ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ তৈরির চেষ্টায় তাদের তেল রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ওয়াশিংটনের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র রাষ্ট্রগুলোর উত্তেজনা তীব্র হয়ে ওঠে।
এসব নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ২০১৫ সালের চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া পারমাণবিক তৎপরতার সীমা লঙ্ঘন করতে শুরু করে ইরান।
মে ও জুনে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় জলসীমায় বেশ কয়েকটি তেল ট্যাঙ্কারে হামলা হয়। এসব হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। দায় অস্বীকার করে ইরান।
গত মাসে হরমুজ প্রণালীর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নজরদারি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে ইরান। এর জবাবে ইরানে বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েও শেষ মূহুর্তে সিদ্ধান্ত থেকে সরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সর্বশেষ হরমুজ প্রণালী ও ইয়েমেন উপকূলের বাব আল মানডাব প্রণালীতে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোর জাহাজগুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সামরিক জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াশিংটন।