কোরবানির ঈদ এলেই মসলার কদর বাড়ে। এই ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আগে থেকেই বাড়িয়ে দিয়েছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও এলাচসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম। বিষয়টি টের পেয়ে ঈদের প্রায় এক মাস আগেই মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে সরকারের পাঁচটি সংস্থা। মূল্য যাতে নাগালের বাইরে যেতে না পেরে সে জন্য সংস্থার সদস্যরা বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করতে যাচ্ছে। টিমের সদস্যরা দেশের মোকাম, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে তদারকি করবে। অনিয়ম পেলেই দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং চলছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং সেল, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন, র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বাজার মনিটরিং করছেন। কোথাও অসঙ্গতি দেখলে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এর পরও ঈদকে ঘিরে বিশেষভাবে মনিটরিং করা হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম পেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভোক্তার স্বার্থে মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর দৈনিক বাজারমূল্য পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এক মাস আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ এক মাস আগে ৩০-৩৫ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আদার দাম এক মাস আগে ১৪০-১৮০ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ১৪০-২০০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা কেজি, এক মাস আগে ছিল ৭০-১০০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৬০ টাকা, এক মাস অগে ছিল ১২০-১৩০ টাকা। এলাচের দাম উঠেছে ২৮০০ টাকা কেজি, এক মাস আগে ছিল ২৬০০ টাকা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অন্য বছরের মতো এবার যাতে কোনোভাবেই পণ্যের দাম না বাড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। তাই অধিদফতরের পক্ষ থেকে ঈদ ঘিরে বিশেষভাবে মনিটরিং সেল নামানো হবে। যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে। এ ছাড়া দেশের কোরবানির হাটে বিশেষ নজরদারি করা হবে। ভোক্তা যাতে প্রতারিত না হন, এ জন্য সার্বিক বিষয়টি দেখা হবে। যারা অনৈতিক কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কোরবানির ঈদ আসার আগেই মসলাসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে এবার দেশে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই।