ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানা করতে যাচ্ছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। দ্য ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ‘ঘনিষ্ঠ সূত্রের’ বরাতে জানিয়েছে কয়েকটি গণমাধ্যম। শনিবার (১৩ জুলাই) বিবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে।
২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার কাছে ফেসবুক প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ অ্যাকাউন্টের তথ্য পাচার করে করে বলে অভিযোগ উঠে। এই তথ্য ব্যবহার করা হয় ট্রাম্পের নির্বাচনি ক্যাম্পেইনকে সহযোগিতা করতে। বিষয়টি ফাঁসের পর ২০১৮ সালে ফেডারেল বিভাগ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। সেই জেরেই এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে ফেসবুককে। এফটিসির সদস্যরা ৩-২ ভোটে ফেসবুককে জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সম্ভাব্য জরিমানার অর্থ ফেসবুককে ঠিক কতদিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে তা এখনো অস্পষ্ট। এছাড়া এটি চূড়ান্ত করতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সিভিল ডিভিশনের অনুমোদন প্রয়োজন।
কিভাবে তথ্য চুরি করেছিল ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকা? ফেসবুকর মাধ্যমে ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকা ব্যবহারকারীদের একটি মানসিক দক্ষতার গেম খেলতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ব্যক্তিত্ব গবেষণার সেসব তথ্য ব্যবহার করা হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনি ক্যাম্পেইনে। ওই পদ্ধতিতে শুধু যে খেলাটি খেলছে কেবল তার নয়, এমনকি তার বন্ধুতালিকায় থাকা অন্যান্যদেরও তথ্য বেহাত করা হয়। ২০১৮ সালে এই ঘটনায় ফাঁস হলে ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকা বন্ধ হয়ে যায়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষও নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়।
ফেসবুককে এত অর্থ জরিমানা করায় কে কি ভাবছে? জরিমানায় অর্থের অংকটা অনেক বড় দেখালেও ডেমোক্র্যাট আইনজীবীরা এই শাস্তিকে ‘অপর্যাপ্ত’ হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার জোর দিয়েছেন ফেসবুকের মৌলিক পরিবর্তন আনার ওপর। কারণ তথ্য সুরক্ষায় পুনরায় গাফিলতি করতে পারে ফেসবুক।
এদিকে ফেসবুকে বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর হলো, জরিমানার খবর চাউর হওয়ায় ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেনি বরং বেড়েছে শতকরা ১ দশমিক ৮ ভাগ।