দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে নানামূখী উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের স্বদিচ্ছা থাকলে তেমন প্রভাব নেই। কমেছে লেটার অব ক্রেডিট(এলসি)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আমদানি কমেছে মূলধনী যন্ত্রপাতির। একই সঙ্গে কমেছে কয়েকটি খাদ্য পণ্যেও। তবে বেড়েছে সিমেন্টের কাঁচা মালের আমদানি।
সূত্র মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মোট এলসি খোলা হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৯৬ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ছয় হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। এ হিসাবে ১১ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এক হাজার ১৪৫ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মধ্যে শুধু অন্যান্য খাতের এলসি কমেছে এক হাজার ১০১ কোটি ডলার। মূলত গত অর্থবছরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বড় অঙ্কের এলসি ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, প্রক্রিয়াগত কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সরঞ্জাম আমদানির জন্য গতবছরের ২০ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকে এক হাজার ১৩৮ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়। তবে চুক্তি মোতাবেক ওই এলসির পুরো দায় পরিশোধ করবে রাশিয়া। এ ছাড়া বন্যায় গত বছর প্রচুর ফসলহানি হয়। এবার ফসল উৎপাদন স্বাভাবিক থাকায় গত বছরের মতো চাল ও গম আমদানির চাহিদা নেই।
গত অর্থবছরের জুলাই-মে চাল আমদানির জন্য মাত্র ছয় কোটি ৮২ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে খোলা হয় ১৯৮ কোটি ডলার। চালের এলসি কমেছে ৯৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গমের এলসি ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ১২৫ কোটি ডলারে নেমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চিনির এলসি আগের অর্থবছরের ৭৭ কোটি ডলার থেকে ৫৬ কোটি ডলারে নেমেছে। পেঁয়াজের এলসি ৩৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে ২০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ভোজ্য তেলের এলসি খোলা হয়েছে ১৫৩ কোটি ডলার। আগের বছরের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম। ওষুধ, টেক্সটাইল ফেব্রিক্স এক্সেসরিজ, কেমিক্যাল পণ্য, টিন প্লেট, পেপার ও পেপার বোর্ডের এলসি কমেছে।
অনেক পণ্যের এলসি কমলেও ব্যাপকভাবে বেড়েছে সিমেন্টের কাঁচামালের। সিমেন্টের কাঁচামালের ২২৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে ৭ কোটি ডলারের এলসি করা হয়েছে। তেল বীজের এলসি বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ ছাড়া ডাল, দুগ্ধ পণ্য, সুতা তৈরির সরঞ্জাম, সুতা, ওষুধের কাঁচামাল, স্ট্ক্র্যাপসহ বিভিন্ন পণ্যের এলসি বেড়েছে।
এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ হালিম চৌধুরী বলেন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং এলসির চাপ কম থাকায় এখন বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্বস্তি কমে গেছে। কিছুদিন ধরে ডলারের দরও স্থিতিশীল রয়েছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়।