হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএসএস বক্মার ইরানের একটি ড্রোন ‘ধ্বংস করেছে’ বলে পেন্টাগন দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই ড্রোনটি মার্কিন নৌযানের ১ হাজার গজের মধ্যে উড়ে এসে হুমকি দেয়ায় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সেটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়, বলছে তারা।
হরমুজকে ঘিরে ওয়াশিংটন-তেহরান ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই সেখানে এ ড্রোন ভূপাতিতের দাবি উঠল, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
“ড্রোনটি ইউএসএস বক্সারের ১ হাজার গজের মধ্যে উড়ে এসেছিল, সরে যাওয়ার জন্য সেটিকে কয়েকবার বলা হলেও ড্রোনটি তা অবজ্ঞা করে,” হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে এমনটাই জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে ইরানের ধারাবাহিক উসকানির অংশ হিসেবেই দেখছে।
“নিজেদের লোকজন, স্থাপনা ও স্বার্থ রক্ষার অধিকার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তাৎক্ষণিকভাবে ওই ড্রোনটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়,” বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
পেন্টাগন জানিয়েছে, হরমুজ উপকূলে চলাচলের সময় উড়ে আসা একটি ড্রোনের বিরুদ্ধে ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ নিয়েছে ইউএসএস বক্সার।
“আমাদের মূল্যায়ন বলছে, ড্রোনটি ছিল ইরানি,” বলেছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র কমান্ডার রেবেকা রেবারিচ।
ওয়াশিংটন ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করলেও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভেদ জারিফ তাদের কাছে এখন পর্যন্ত ড্রোন হারানোর কোনো খবর নেই বলে জানিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরান ও এর মিত্রদের ওড়ানো ড্রোনগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ড্রোন দিয়ে ইরাকের ইরানঘনিষ্ঠ মিলিশিয়ারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন ঘাঁটি ও সেনাবাহিনীর ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে বলে অনুমান পেন্টাগনেরও।
বৃহস্পতিবার ইউএসএস বক্সারের কাছে উড়ে আসা ড্রোনটিকে ‘ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের’ মাধ্যমে ভূপাতিত করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন।
এর আগে গত মাসে ইরান তাদের আকাশসীমায় ‘অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করা’ একটি মার্কিন ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্র সেসময় বলেছিল, তাদের ড্রোনটি ইরানি নয়, আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে জিব্রাল্টারে ইরানি একটি তেলবাহী ট্যাংকার আটকের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও তেহরানের সম্পর্কে অবনতি দৃশ্যমান হচ্ছে।
সুপার ট্যাংকার গ্রেস ১ সিরিয়ার বানিয়াস তেল শোধনাগারের জন্য জ্বালানি নিয়ে যাচ্ছে এমন সন্দেহে ব্রিটিশ মেরিনের সহায়তায় ও নৌযান এবং এর কার্গোগুলো জব্দ করা হয়।
বানিয়াস শোধনাগারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আছে।
‘সন্দেহের বশবর্তী’ হয়ে তেলবাহী ট্যাংকার আটকের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে ইরান গ্রেস ১-কে শিগগিরই ছেড়ে না দিলে পাল্টা ব্যবস্থারও হুমকি দিয়ে রেখেছে।
জ্বালানি চোরাচালানের অভিযোগে তেহরান বৃহস্পতিবার ‘বিদেশি একটি ট্যাংকার’ ও এর ক্রুদের আটক করার কথাও জানিয়েছে।