ঋণখেলাপিদের টাকা আদায়ে বিশেষ সেল গঠনের নির্দেশ
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৭-২৩ ১০:৪৪:৪৮
যে সকল গ্রাহকদের কাছে ১০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে, তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিশেষ তদারকি সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গঠিত বিশেষ এ সেলের নেতৃত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের একজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এ সেল ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অগ্রগতি প্রতিবেদন পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করবে। একই তথ্য জমা দিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকেও।
ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বিভাগটির মহাব্যবস্থাপক একেএম মহিউদ্দিন আজাদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনের একটি বিবরণীও সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে তফসিলি ব্যাংকগুলোর অন্যান্য সব শ্রেণীকৃত ঋণসহ ১০০ কোটি টাকার বেশি স্থিতিবিশিষ্ট শ্রেণীকৃত ঋণ হিসাবগুলোর নিবিড় তদারকি একান্ত আবশ্যক। এজন্য সব ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রধান করে প্রয়োজনীয়সংখ্যক জনবল নিয়ে একটি সেল গঠন করতে হবে। ‘স্পেশাল মনিটরিং সেল’ নামের এ সেলের দায়িত্ব হবে ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি স্থিতির খেলাপি ঋণ আদায় জোরদার করা। একই সঙ্গে এ ধরনের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও খেলাপি গ্রাহকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে যথাযথ প্রদক্ষেপ নেয়া।
বিশেষ এ সেল প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সংযুক্ত ত্রৈমাসিক বিবরণীর মাধ্যমে এ কমিটি ১০০ কোটি বা তার বেশি টাকার ঋণখেলাপিদের থেকে আদায় অগ্রগতিসহ যাবতীয় তথ্য নিজ নিজ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে অবহিত করবে। এছাড়া প্রতি তিন মাস শেষে পরবর্তী মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব পোর্টালের (ইডিডব্লিউ) মাধ্যমে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের টাস্কফোর্স সেলে দাখিল করতে হবে।
বিবরণীতে প্রদর্শিত কোনো খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা অন্য কোনো কারণে নিয়মিত বলে গণ্য হলেও নিয়মিত হওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী আট ত্রৈমাসিক পর্যন্ত তা বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা, যা ওই সময়ে বিতরণকৃত ঋণের ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। একই সময়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ছিল অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ। ২০১৯ সালের মার্চ শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। ব্যাংকিং খাতের বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি। এর বাইরে অবলোপনকৃত ঋণ রয়েছে ৪০ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৫১ হাজার ২৬২ কোটি টাকা।