দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক আসামি খন্দকার এনামুল বাছিরকে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে জেল কোড অনুযায়ী তাকে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাছিরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল উপস্থিত হয়ে শুনানি করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী মো. কামাল হোসেন ও কবির হোসেন শুনানি করেন।উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই)দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এনামুল বাছিরকে হাজির করা হয়।
সোমবার (২২ জুলাই) রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে দারুস সালামের লালকুঠি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদক।
প্রসঙ্গত, ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় এনামুল বাছিরসহ পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ১৬ জুলাই মামলা দায়ের করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় ঘুষ লেনদেন নিয়ে তাদের কথোপকথনের অডিও’র সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়,‘দুদকের বরখাস্ত পরিচালক বাছির নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। মিজান দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য বাছিরকে ঘুষ দিয়েছেন। আর এসব করে দু’জনই দণ্ডবিধির ১৬২/১৬৫ (ক)/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নথিপত্র পর্যালোচনা, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) ফরেনসিক প্রতিবেদন ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদকে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের ২৫ নভেম্বর বাছিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাজ শুরু করেন গত বছরের ২৯ নভেম্বর।
অনুসন্ধান চলাকালে এ বছরের ৯ জুন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় খবর সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার হয় যে, ডিআইজি মিজান তার বিরুদ্ধে চলা অনুসন্ধান প্রভাবিত করতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। বিষয়টি দুদকের নজরে আসলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে বাছিরের বক্তব্য নেয়। পরে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। গত ১৩ জুন বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়।