কৃষি ভিত্তিক নতুন পণ্যে অর্থায়নের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৯-০৭-২৪ ২০:৩০:২৫


বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) ইমপ্যাক্ট অব ব্যাংক বেজড রুরাল অ্যান্ড আরবান ফাইন্যান্সিং অন ইকনোমিক গ্রোথ অব বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের একটি বড় অংশ অর্থায়ন হয় গতানুগতিক পণ্যে। এর পরিবর্তে কৃষি ভিত্তিক নতুন পণ্যে অর্থায়ন করলে ঋণ খেলাপী হওয়ার আশঙ্কা কম। এর মধ্যে রয়েছে কুমির, কাঁকড়া চাষ, কচ্ছপ, কেঁচো, উটপাখি, সাপের বিষ এবং ব্যাঙ-এর পা। যা এরই মধ্যে বিদেশে রফতানি হচ্ছে এবং খামারিরা লাভবান হয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ইমপ্যাক্ট অব ব্যাংক বেজড রুরাল অ্যান্ড আরবান ফাইন্যান্সিং অন ইকনোমিক গ্রোথ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম. মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মোঃ আহসান হাবীব। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের মহাপরিচালক মহাঃ নাজিমুদ্দিন। তিনি ব্যাংকিং অন্তর্ভুক্তির ওপর জোরোরোপ করেন।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা; পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী; কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। তিন সদস্যের গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন- বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা ; সহকারি অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ এবং বিআইবিএম-এর প্রভাষক রিফাত জামান সৌরভ।

কর্মশালার উদ্বোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম. মনিরুজ্জামান বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ঋণের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থায়ন প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখে। বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে এর কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে এরই মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির জন্য নতুন নতুন প্রস্তাব আসছে যা যাচাই-বাছাই চলছে।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, কৃষি এবং এসএমই খাতে বেশি অর্থায়ন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে এসব খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, গ্রামীণ এবং শহর অর্থায়নের মধ্যে ওভারলেপিংয়ের হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরণের কৃষি ভিত্তিক পদক্ষেপে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। এ কারণে বিদেশী ব্যাংকও গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ১০ টাকার ব্যাংক হিসাব আর্থিক অর্ন্তভ’ক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখছে।

কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে গ্রামীণ জনপদের অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গ্রামে ৩৯ শতাংশ ঋণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ হয়। বাকী ঋণ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ হয় যার সুদ ২৫ থেকে ১২০ শতাংশ। গ্রামীণ এবং শহরের মানুষের মধ্যে ঋণ বিতরণ করে এসডিজি বাস্তবায়ন আরও সহজ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক গ্রামীণ জনপদে আরও বেশি ব্যাংকিং কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন।