অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে জাতীয় সংসদে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিজস্ব নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও র্যাবও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ওই এলাকায় ।
সাংবাদিক ও এমপিদেরও প্রবেশে কড়াকড়ি করা হয়েছে। সাংসদদের পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে সংসদে। আর অধিবেশন কভারেজ পাশের কার্ডের পাশাপাশি সাংবাদিকদের তথ্য অধিদফতর থেকে দেওয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রদর্শন করতে হচ্ছে। যা জাতীয় সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
সংসদের একাধিক সূত্র জানায়, প্যারিসে বোমা হামলার পর থেকে এই নজীরবিহীন নিরাপত্তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অচিরেই সংসদ ভবনের ফটকে পরিচয়পত্র শনাক্তকরণ (পাঞ্চিং মেশিন) যন্ত্র বসানো হবে। আর পরিচয়পত্র ঝুলানোর বিষয়ে সাংসদদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ ও হুইপরা এ নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আজও অনেক অপরিচিত এমপি কার্ড ঝুলাননি।
প্রসঙ্গত, গত ৪৭ দিনে দেশে ১৩টি হামলায় দুই বিদেশি, দুজন পুলিশ, একজন প্রকাশকসহ নয়জন খুন হয়েছেন। এসব ঘটনার বেশির ভাগেরই রহস্য উদঘাটন হয়নি। এর মধ্যেই গত শুক্রবার ফ্রান্সের প্যারিসে জঙ্গি হামলায় অন্তত ১২৯ জন নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন রাষ্ট্র নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবছে।
এ বিষয়ে সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ সোমবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, সংসদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেক বহিরাগত মুজিব কোট পরে সংসদে ঢুকে যাচ্ছেন। সাংসদ ভেবে নিরাপত্তা বাহিনী ভয়ে তাদের কিছু বলে না। তাই সবাইকে কার্ড ঝুলিয়ে প্রবেশের অনুরোধ করা হয়েছে।
সংসদ সূত্র জানায়, গত শনিবার সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের কক্ষে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানে সংসদ ভবনে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৪০ জন সদস্য ও দেড় শ আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি এখন র্যাবও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।