ঈদুল আযহা উপলক্ষে নৌপথে ঘরমুখো মানুষকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দের যাত্রা উপহার দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) ও ঢাকা নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২১৮টি লঞ্চ প্রস্তুত করেছেন লঞ্চ মালিকরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতোই এবারও ঈদের আগেই নিজেদের ‘রুটিন কর্ম’ সম্পাদনের মাধ্যমে প্রস্তুতি শেষ করেছে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাটে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিম। এর মধ্যে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ঈদ ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় তিন লাখ মানুষের আপন গন্তব্যে পৌঁছানো নির্বিঘ্ন করতে এরই মধ্যে তিন দফা বৈঠকের মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ সোমবার (৫ আগস্ট) মতিঝিলে বিআইডব্লিওটিএ ভবনে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি যাত্রা নির্বিঘ্ন করার দিকে জোর দেওয়া হয়। এর আগে বিআইডব্লিওটিএ ও ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি বৈঠক ও জুনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়ার জন্য আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এবার একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। যেখানে যাত্রীরা স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবেন। যেহেতু ঢাকায় এই মুহূর্তে ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে, সেক্ষেত্রে কোনো যাত্রীর মধ্যে হঠাৎ ডেঙ্গু রোগের ‘সিনড্রোম’ পরিলক্ষিত করলে এই মেডিক্যাল টিমের কাছে গিয়ে তাৎক্ষণিক সেবা নিতে পারবেন।
এদিকে, নৌপথে ঈদযাত্রায় নিরাপত্তাকে হুমকি হিসেবে না নিলেও যথেষ্ট সজাগ দৃষ্টি নিয়ে টহল নিশ্চিত করবে পুলিশ, র্যাব, নৌপুলিশ, আনসার সদস্যদের নিয়ে গড়া টিম। এর পাশাপাশি থাকবে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি ইউনিট ও কোস্ট গার্ডের মনিটরিং টিম। এছাড়া শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়িত্ব পালন করবে স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা।
এবারের ঈদে যাত্রী পরিবহনে যুক্ত থাকবে মোট ২১৮টি লঞ্চ। যার প্রায় সবগুলোই একমুখী সেবা দেবে। অর্থাৎ প্রতিটি লঞ্চই একবার ঢাকা থেকে ছেড়ে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে তাৎক্ষণিকভাবে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। যদিও বিষয়টি নতুন নয়, প্রায় প্রতিবছরই এভাবে যাত্রী পরিবহন করে আসছে লঞ্চগুলো। তবে এবার বেশ কিছু নতুন বৃহদাকার লঞ্চ যুক্ত হওয়ায় যাত্রীরা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশা বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের।
এসব বিষয়ে ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম-পরিচালক আলমগীর কবির বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি শেষের দিকে বলা যায়। আমরা আমাদের প্রচলিত নিয়মেই প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে প্রতিবারের তুলনায় এবার বেশ কিছু বাড়তি কাজ করা হয়েছে, যা যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করবে। সব মিলিয়ে আশা করছি ভালোভাবেই ঈদের যাত্রা সমাপ্ত করতে পারবো।