প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলাকারীদের একজন হিসেবে পত্রিকায় প্রকাশিত এক ব্যক্তির ছবি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর ধরা পড়ল, ওই ছবি বানানো হয়েছে জালিয়াতি করে।
ভাইরাল হয়ে যাওয়া ছবিতে দেখা যায় আত্মঘাতী হামলাকারীদের মতো ভেস্ট পরে দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন কোরআন হাতে। স্পেনের খবরের কাগজ লা-রাজন ওই ছবি প্রকাশ করে তার ক্যাপশনে লিখেছে- ‘প্যারিসে হামলাকারীদের একজন’। আর তাদের প্রতিবেদনে লেখা হয়, “হামলাকারীদের মধ্যে একজন সিরিয়ান শরণার্থীদের সঙ্গে গ্রিসে প্রবেশ করে। প্যারিসে হামলাকারী অজ্ঞাতনামা ওই সন্ত্রাসীদের বয়স ছিল ১৫ থেকে ১৮ এর মধ্যে। তারা তিনটি দলে ভাগ হয়ে হামলা চালায়।”
পরে জানা যায়, কানাডা প্রবাসী এক ভারতীয় শিখের ছবি ফটোশপে ফেলে গায়ে চড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আত্মঘাতী হামলার ভেস্ট। তার হাতের কোরআনও এসেছে একই কায়দায়। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ায় লা-রাজন রোববার ক্ষমা চেয়েছে বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। এনডিটিভি লিখেছে, ছবির ওই ব্যক্তির নাম ভিরেন্দর জুব্বাল। কানাডায় তিনি কাজ করছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে। জালিয়াতি করা ছবিটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে আসল ছবিটি পোস্ট করেন জুব্বাল। ওই ছবিতে জুব্বালকে একটি আইপ্যাড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ফটোশপে সম্পাদনা করে ওই আইপ্যাডের জায়গায় কোরআন শরিফ আর জুব্বালের গায়ে ভেস্ট বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অব্শ্য দুই ছবিতেই জুব্বালের মাথায় দেখা যায় পরিচিত সেই পাগড়ি, যা শিখরা ব্যবহার করে।
তিনি টুইটে লিখেছেন, গত শুক্রবার রাতে প্যারিস হামলায় ১২৯ জন নিহত এবং সাড়ে তিনশ আহতের ঘটনার সঙ্গে তার যে কোনো যোগাযোগ নেই, এর প্রমাণ দিতেই ওই ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। “আমার বিশ্বাস, সবাই বুঝতে পারবে আমার সঙ্গে কী হয়েছে। ফটোশপ করা এক ছবির কারণে আমিও ভাইরাল হয়ে গেছি, যেখানে আমাকে সন্ত্রাসী বলা হয়েছে।” কারা কোন উদ্দেশ্যে এই জালিয়াতি করেছেন, তা জানা যায়নি। তবে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান লিখেছে, ইন্টারনেটে ভিডিও গেইমিং কমিউনিটির এক বিতর্কের মধ্যে সমালোচনামূলক মন্তব্য করায় জুব্বালকে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। জুব্বাল টুইটে লিখেছেন, “আমি পাগড়িওয়ালা শিখ, থাকি কানাডায়। জীবনে কখনো প্যারিস যাইনি, অথচ মানুষ আমার সেলফি সম্পাদনা ও ফটোশপ করে এমন অবস্থায় নিয়ে গেছে যেন আমিই হামলার জন্য দায়ী।”