প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য ৮শ’ ৫৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে ভারত সরকার। এর প্রভাব পড়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরেও। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ পড়ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। পাইকারি বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দরে। আর খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজের দর হয়ে যাচ্ছে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেনাপোল বন্দর ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
দুই দিন আগেও প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৪১০ মার্কিন ডলারে। সেই সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা।
বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করতেই দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। তবে, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে পেঁয়াজ সংকটের কারণেই রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কৌশল হিসেবে এর মূল্য দ্বিগুণ করেছে। এমন চলতে থাকলে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে। তবে, ভারত সরকার যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, তবে বাজারমূল্য আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে।
বেনাপোল বন্দরের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজ ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৮৫৫ ডলার মূল্যে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১২২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি জনি ইসলাম বলেন, ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে পেঁয়াজ আমদানি হতো নাসিক থেকে। সেখানে বন্যার কারণে এখন আমদানি হচ্ছে সাউথ (দক্ষিণ) থেকে। পরিবহন খরচ ও ক্রয়মূল্য বেশি পড়ে যাওয়ায় সেখানে দাম বেড়েছে। বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত আমদানি খরচ পড়ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা।
তিনি জানান, খুলনায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দরে। চাহিদা থাকায় বেশি দাম দিয়েই পেঁয়াজ আমদানি করছেন তারা।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মধুমিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রেজাউল হোসেন বলেন, বন্যার কারণে এক মাসের ব্যবধানে ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অনেক। রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় দাম আরও বেশি বেড়েছে। একারণে, পেঁয়াজের বাজার সহনশীল রাখতেই এর রপ্তানিমূল্য বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, দুই দিন আগে দিল্লি থেকে পেট্রাপোল কাস্টমসে পাঠানো ফ্যাক্স বার্তায় পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখানে বলা ছিল, এখন থেকে পেঁয়াজের কোনো চালান দেশের বাইরে রপ্তানি করতে হলে বর্তমানে নির্ধারণ করা ৮শ’ ৫৫ মার্কিন ডলারে করতে হবে।
সজিব নামে বেনাপোলের স্থানীয় এক ক্রেতা বলেন, তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে প্রায় দশ টাকা। এত দামে পেঁয়াজ কেনা সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টকর।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে ১ হাজার ১১৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। তবে, মূল্য বৃদ্ধির পর পেঁয়াজ আমদানি কিছুটা কমেছে।