হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমে আসার আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যসচিব ড. জাফর উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘পেঁয়াজের দাম আর বাড়বে না। শিগগিরই কমে যাবে।’
অন্যদিকে ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ আবু রায়হান আলবিরুনী বলেছেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার (আজ বিকেলের) মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। টিসিবি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। একই সঙ্গে ভারতের বাইরে মিয়ানমারের কাছ থেকে পেঁয়াজ আমদানির চিন্তা করছে সরকার।’
তবে বাণিজ্যসচিব পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেননি। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়। এতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব দাম কমার আশ্বাস দেন।
সেখানে ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ আবু রায়হান আলবিরুনী সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ টন। আমরা উৎপাদন করতে পারি ২৩ লাখ ৭৬ হাজার টন। কিন্তু পচনশীল পণ্য হওয়ায় বাংলাদেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে আমাদের ১১ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি আরো জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ টন পেঁয়াজের এলসি সম্পন্ন হয়ে আছে। আমাদের মজুদে আছে ১৬ লাখ টন। আমদানির পর্যায়ে রয়েছে ৪০ হাজার টন। তাই পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।
বাণিজ্যসচিব ড. জাফর আরো বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন অনেক কম হয়েছে। এ কারণে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও দাম বেড়ে গেছে।
বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘সাধারণত ভারত থেকে প্রতি টন পেঁয়াজ ২৫০ থেকে ৩০০ ডলারের মধ্যে আমদানি করি আমরা। কিন্তু তাদের ফলন কমে যাওয়ায় এই দাম উঠে গেছে ৮৫০ ডলারে।’
দেশে পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তার পরও ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পরদিনই বাংলাদেশে কেন দাম বেড়ে গেল? এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি বৈঠকে উপস্থিত কারো কাছ থেকে। এদিকে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার কমানোর জন্য উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আমদানির ক্ষেত্রে বন্দরে যাতে বাড়তি সময় ব্যয় না হয় তার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকেও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান সচিব।
জাফর উদ্দিন বলেন, পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে দামের পার্থক্যটা বেশি। এটা কমানোর চেষ্টা চলছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও আরো কিছু এজেন্সি এ বিষয়ে কঠোর মনিটর করছে। আশা করি সমস্যাটা আর থাকবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বৈঠকটি হওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি ছিলেন না। তাঁর পক্ষে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যসচিব। গতকালই বাণিজ্যসচিব হিসেবে ড. জাফর উদ্দিনের প্রথম কার্যদিবস ছিল।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস