সংকট থাকায় খুচরা বাজারে হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। গিয়ে ঠেকে ৮০ টাকায়। যা মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে। একইসঙ্গে টিসিবি খুচরা ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। এতে করে কয়েকদিনের মধ্যেই ১০ টাকা কমে ৭০ টাকা কেজিতে চলে এসেছিল পেঁয়াজ। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে ফের ১০ টাকা করে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যটির দাম। আবার বিক্রি হতে দেখা গেছে ৮০ টাকা কেজি দরে। তবে কিছুটা কমেছে আদা-রসুনের দাম।
ভারতে রপ্তানির কথা থাকলেও এর কোনো প্রভাব নেই ইলিশের বাজারে। ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় বরং সপ্তাহের ব্যবধানে নিম্নমুখী রয়েছে মাছটির দর। একইভাবে দাম কমেছে অন্যান মাছ ও বিভিন্ন সবজির। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে নানা শাকের দাম।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে সানবিডির চোখে এ চিত্র ধরা পড়ে।
রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট ও কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে। এ হিসেবে কিছুটা কমেছে এ সপ্তাহে। এক সপ্তাহ আগে টমেটো ছিল ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। আর গাজার বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
একইভাবে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে পটল বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে। একইসঙ্গে ঝিঙা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ও উস্তা ৪০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, শসা (হাইব্রড) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা (দেশি) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর ছড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ফুলকপি ২৫ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঝালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে শাকের দাম। প্রতি আঁটি লালশাক ৭ থেকে ১০ টাকা, মুলাশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কুমড়াশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউশাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকা এবং পুঁইশাক ১৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পূজা উপলক্ষে ভারতে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্দ চূড়ান্ত হয়েছে। এরপরও ইলিশের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং দাম কমেছে কিছুটা। এসব বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায় মিলছে। এছাড়া বিভিন্ন আকারভেদে জাটকা বিক্রি করতে দেখা গেছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে।
কিছুটা দাম কমে এসব বাজারে প্রতি কেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়, মৃগেল ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়, পাঙাশ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, চিংড়ি হরিণা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, বাগদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, গলদা ৫০০ থেকে এক হাজার টাকায়, শিং ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও বাইন ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি এবং টিসিবির ট্রাক সেলে খুচরা ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও আবারও খুচরা বাজারে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পিঁয়াজের দর। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ইন্ডিয়ান (মোটা) ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় আমদানি এখনও পরিপূর্ণ হয়নি। পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে। এজন্য দামও বেড়েছে।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা ইদ্রিস আলী বলেন, এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে যায়। তখন আমরা দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন আবার দাম বাড়তি। তবে বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ এলে দাম কমে যাবে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। প্রতি কেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, লেয়ার (সাদা) ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়, লেয়ার (লাল) ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়।
গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে ৫৫০ টাকা কেজি, খাসির ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। আর বকরি ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল ও ডিমের বাজার।