আর নয় শীতকালীন রোগ বালাই!
প্রকাশ: ২০১৫-১১-২০ ১৯:৫৩:৪২
শীতের মৌসুমে শুধু সর্দি-জ্বরই নয়, কখনো কাশি, গলা ব্যাথা, শ্বাস কষ্ট, পেটের সমস্যা, ত্বক ও চুলের সমস্যা লেগেই থাকে। এসব অসুস্থতা থেকে মুক্ত থেকে সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিময় জীবন কাটাতে চাইলে মেনে চলুন সহজ কিছু ব্যাপার।
শীত মৌসুমে ভাল থাকার উপায়ঃ
১. ভিটামিন সি যুক্ত খাবার: শীতকালের অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধ করতে ভিটামিন সি-এর জুড়ি নেই! তাই প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন সকল শাকসবজি ও ফল খেতে হবে। ভিটামিন সি ঠান্ডাজনিত সমস্যা, নিউমোনিয়া ও ফুসফুসের অন্যান্য সংক্রমণ দূর করে। হৃদরোগ ও স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা হ্রাস করে। ভিটামিন সি একটি উন্নত মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি যেমন ত্বক সুন্দর রাখে, তেমনি ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে ।
২. খাবারে সরিষার তেল ব্যবহার: শীতকালে রোজকার খাবারে ব্যবহার করুন সরিষার তেল।সরিষার তেল শরীরে উষ্ণতা যোগায়। এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সরিষার তেল হৃদরোগ, ঠান্ডাজনিত সমস্যা, সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়তা করে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৩. বেশি পরিমাণে বার বার পানি পান: হালকা কুসুম গরম পানি এই সময় খুব উপকারি। শীতকালেই শুষ্ক আবহাওয়াই শরীর থেকে বেশি পরিমাণ পানি সুশে নেয় । তাই সহজেই শরীর চড়া হয়ে যায় এবং দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ। বিশেষ করে এ সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য , ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় ক্রনিকরূপে। তাই বেশি বেশি পানি পান করা দরকার।
৪. ব্যায়াম: ব্যায়াম বারো মাসেই সুস্থ থাকার অন্যতম উপায়। তবে শীতকালে বিভিন্ন পুরোনো অসুখ বিশেষ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা, বাতের ব্যথা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করলে এসব ব্যথাজাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাস পাবে, শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়বে, ফলে শীতকালীন অসুখ বিসুখের সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যাবে।
৫. ঘুমানোর আগে গরম পানি পান: ঘুমানোর আগে পান করতে হবে এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানি। এতে যেমন শরীরের মেটাবলিজমের হার বাড়বে, তেমনি দূর থাকবে ঠান্ডাজনিত সমস্যাও। সর্দি, কাশি, বুকে কফ জমা, সাইনোসাইটিসের ব্যথা ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করবে ।
শীতজনিত সমস্যার প্রতিকারঃ
সর্দি জ্বরে করনীয়ঃ
- আদা, তুলশী পাতার রস পান করা।
- গরম পানি কিংবা গরম পানীয় যেমন-লেবু চা, আদা চা, মধু লেবু মিশানো কুসুম গরম পানি পান করা।
- ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল সর্দি-কাশি-জ্বরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমলকী, লেবু, কাঁচামরিচ ইত্যাদি খাওয়া খুব দরকার।
- সরিষার তেল দিয়ে সালাদ, মুড়ি মাখানো, বিভিন্ন জাতের ভর্তা খাওয়া জেতে পারে।
- শীতকালের ঠাণ্ডায় শুধু আদা এবং রসুন বাটা দিয়ে মুরগির স্যুপ খেলে সঙ্গে সঙ্গেই তা ওষুধের কাজ করে। মুরগির সাথে গাজর, সালগম ইত্যাদি সবজিও দেওয়া যেতে পারে।
- বিশ্রাম ও ঘুম খুব কার্যকরী। অসুস্থতা নিয়ে বেশী কাজ না করা উত্তম।
সর্দির সাথে কাশি থাকলে:
- অল্প গরম পানি (সাথে সামান্য লবণ বা আদার রস মিশিয়ে) দিয়ে গড়গড়া করা।
- গরম পানির বাষ্পে শ্বাস নেয়া।
- আদা ও লবঙ্গ দিয়ে ‘গ্রিন টি’ বা পুদিনা পাতার চা দিনে দুইবার।
- কাশি বা গলা খুসখুসে লবঙ্গ বেশ কার্যকর। একটি লবঙ্গ মুখে রেখে আস্তে আস্তে চুষে খেতা পারেন।
শীতকালীন সমস্ত সমস্যা দূরে প্রতিদিন মধু ও আদা’র সিরাপঃ
বড় বড় দুই টুকরো আদা ছিলে ব্লেন্ড করে নিয়ে আধা কেজি অরগানিক মধুর সাথে মিশিয়ে তারপর রেখে দিতে হবে ২৪ ঘণ্টা। ফ্রিজে রাখলে ভালো।প্রতিদিন ৩ বেলা এক টেবিল চামচ করে এই সিরাপে শরীরে গড়ে উঠবে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, সর্দি-জ্বর-ঠাণ্ডা সেরে যাবে দ্রুত, হজম শক্তি হবে উন্নত।
সতর্কতা –এই মিশ্রণে কোন ধাতব চামচ ব্যবহার করা যাবে না।
সানবিডি/ঢাকা/রাআা