জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ (ট্রিপল নাইন) আরও জনপ্রিয় করতে একটি নীতিমালার আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সরকার এ নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ মাসে নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২৯ সেপ্টেম্বর জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এক আদেশে বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ইমিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম’ শীর্ষক সভায় ইর্মাজেন্সি সার্ভিস পলিসি-৯৯৯ এর জন্য একটি নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
সেবাটিকে আরও জনপ্রিয় ও ফলপ্রসূ করতে জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (পুলিশ ও এনটিএমসি) প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হল। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সেবা সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব/যুগ্ম-সচিব (অগ্নি অধিশাখা), পুলিশ অধিদফতরের ডিআইজি (লজিস্টিকস), পুলিশ অধিদফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯) ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি। জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (আইন) কমিটির সাচিবিক সহায়তা দেবেন। জরুরি সেবা-৯৯৯ আরও সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমিটির প্রধান জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ ও এনটিএমসি) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ট্রিপল নাইন কল সেন্টার পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদের কাজের ধরন, সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাও বলেছি। বিষয়টি নিয়ে দুয়েক দিনের মধ্যে বৈঠকে বসব। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা কাজ সম্পন্ন করতে পারব ইনশাআল্লাহ’।
জানা গেছে, জরুরি প্রয়োজনে বিনা মূল্যে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশি সহায়তার জন্য ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ চালু করা হয়। বিপদ, দুর্ঘটনা বা কোনো সংকটময় মুহূর্তে এ নম্বরে ফোন করে সেবা নিচ্ছেন বহু মানুষ।
জানা গেছে, ৯৯৯ চালুর পর থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক কোটি ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ১১২টি কল এসেছে। এসব কলের মধ্যে এক লাখ ২৫ হাজার ১৩০টি কলের সেবা দেয়া হয়েছে। ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ২১২টি কলই এসেছে অপ্রয়োজনে। এর মধ্যে ৬৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৪টি কল করে ফোনদাতা কথা বলেননি। কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই কল এসেছে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৯টি। মিস কল এসেছে এক লাখ ৬ হাজার ৮৬৯টি।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ১৬ থেকে ২০ হাজার কল আসছে। এ পর্যন্ত যে সব কল এসেছে এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিস-সংক্রান্ত সহায়তার পরিমাণ ছিল ৩০ শতাংশ, পুলিশ সহায়তার পরিমাণ ছিল ৬৩ শতাংশ এবং অ্যাম্বুলেন্স সহায়তার পরিমাণ ছিল ৬ শতাংশ। এ ছাড়া গ্যাস সমস্যা নিয়ে অভিযোগের পরিমাণ ছিল ১ শতাংশ। এ সেবায় নিত্যনতুন বিষয় সংযোজন করা হচ্ছে।
এমনকি এ সেবায় প্রতিবন্ধীদেরও সম্পৃক্ত করতে ৯৯৯ অ্যাপে বাংলায় ভয়েস সুবিধা চালুর পাশাপাশি চ্যাট বট চালু করা হয়েছে। সারা দেশে থানা, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সকে একটি প্রযুক্তিগত নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে এসে ৯৯৯-এর সঙ্গে যুক্ত করার কাজ চলছে। এছাড়া ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং সিস্টেম চালু করা হবে। যাতে একসঙ্গে সব অভিযোগ তদারকি ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া যায়।
পুলিশ অধিদফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি তবারক উল্লাহর নেতৃত্বে পুলিশের ৪০০ সদস্য সেবা-৯৯৯ এর কাজ করছেন। কল রিসিভ করার জন্য ডেস্ক আছে। এসব ডেস্কে বসে একসঙ্গে ৮০ কর্মী কল গ্রহণ করতে পারেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস