ইতোমধ্যেই শীতের শাকসবজি চলে এসেছে বাজারে। নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগে বাজার দখল করায় চাহিদার সুবাধে বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এতে বেশ লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা। এমনকি এবার সবজিতে ধান-পাটের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে স্বপ্ন দেখছেন তারা।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাজারে প্রতিনিয়ত শাকসবজি আসছে। চাহিদা থাকায় বাজারে আনার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রিও হয়ে যাচ্ছে। দামও ভালো। ফলে নজরে আসছে কৃষকের মুখে চওড়া হাসি। বলা হচ্ছে, এই সবজির কারণে গ্রামীণ জনপদে আশ্বিন-কার্তিকে যে একটা অভাব থাকে, সেটা চোখে পড়ছে না।
জানা গেছে, সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে শাকসবজির আবাদ হয় অনেক বেশি। এখানকার চাষিরা শীতের সবজি আগাম বাজার তোলার চিন্তায় আবাদ শুরু করেন। ফলনও হয় ভালো। এখানকার শাকসবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানেও যায়।ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক।বিশেষ করে এখানকার শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, ঝিঙে, ধনেপাতা ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে ট্রাক ভরে।
বাজারে প্রতিকেজি ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শিম ১০০ টাকা ও ধনেপাতা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া একেকটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। আর কৃষকরা এসব শাকসবজি বিক্রি করে ধান ও পাটের চেয়ে ভালো লাভ করছেন।
বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক মোরছালিন বলেন, আমাদের এলাকা শীতের শাকসবজিতে ভরে গেছে। উঁচু জমিতে আগাম জাতের এসব আবাদ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক।
‘ভালো ফলনের জন্য এসব ক্ষেতে নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে, সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। না হলে কাঙ্ক্ষিত ফলন মেলে না।’
অচিনার ডংগায় কাজ করা নারী শ্রমিক ললিতা, জয়ন্তী, হেমলতা ও শ্রাবণী জানান, শাকসবজির ক্ষেতে নিড়ানির কাজ করে প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে হাজিরা মিলছে। এই টাকা সংসার ও ছেলেমেয়ের পড়াশোনার কাজে লাগছে।শিম।তবে তাদের অভিযোগ, পুরুষের সমান কাজ করেন অথচ মজুরি তাদের সমান পাচ্ছেন না। বৈষম্য করা হচ্ছে। যেখানে পুরুষ সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পাচ্ছেন, সেখানে তারা পাচ্ছেন ২৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মন্ডল বলেন, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় সব জমি সবজি চাষের উপযোগী। ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে কৃষকরা তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না। ফলে চলতি মৌসুমে ব্যাপক হারে সবজির আবাদ করা হয়েছে এই উপজেলায়। লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা। একইসঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশা করছেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসআই