কক্সবাজার জেলায় নিয়ম মোতাবেক মৃত ব্যক্তিকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না। ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সর্বমোট ১২ হাজার ৭৮৬ জন মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু এর পরেও প্রায় ৩৬ হাজার কবরবাসি ভোটার তালিকায় রয়ে গেছেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর তথ্যানুসারে বছরে দেশে দশমিক ৫৬ জন লোক মারা যায়। ওই হিসেবে বিগত সময়ে কক্সবাজার জেলায় প্রায় ৪৮ হাজার ব্যক্তির নাম মৃত হিসেবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হয়নি। পরিসংখ্যার ব্যুরোর তথ্যানুসারে এখানে আরো ৩৬ হাজার মৃত ভোটারের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে গেছে। গত রোববার কক্সবাজার জেলা
প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০১৫ পর্যালোচনা এবং আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাবেদ আলীও এসব কবরবাসি ভোটার নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
মোঃ জাবেদ আলী আরো বলেন, কোন মৃত ভোটার যদি ভোট দিয়ে দেয় সেটি খুবই চিন্তার বিষয়। এমন একটি ভোটার তালিকা করতে হবে যেখানে কোন মৃত ভোটার থাকবে না। ১৮ বছরের বেশি বয়সী কেউ ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক হতে হবে। জনপ্রতিনিধরা সহযোগীতা করলে ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম কর্তন সহজ হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে খুবই আদরনীয় কক্সবাজার জেলায় একটি স্বচ্ছ, নির্ভুল ও গ্রহনযোগ্য ভোটার তালিকা দেখতে চাই।
এসময় স্থানীয় জনপ্রতিধিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ না করার কারণেই ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম বাদ যায়নি। তথ্য সংগ্রহকারীরা এক জায়গায় বসে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগ্রিডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোঃ জাবেদ আলী আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনারের কাজ হলো নির্ভূল, স্বচ্ছ এবং সকলের কাছে গুহণযোগ্য একটি ভোটার তালিকা করবে যাতে কোন বিদেশী থাকবে না এবং কোন মৃত ব্যক্তি থাকবে না। প্রতি বছর নতুন ভোটার অর্šÍভূক্ত করা এবং মৃত ব্যক্তিকে ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করাই হচ্ছে হালনাগাদ।
নির্বাচন কমিশনার এই জেলার তিনটি উপজেলা পরিদর্শন করেন। তারমধ্যে টেকনাফ উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদে নিবন্ধন বেশী করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশের নাগরিক হলে অবশ্যই ভোটার করা হবে। কিন্তু এই উপজেলায় ভোটার বৃদ্ধি হয়েছে তা অস্বাভাবিক।
পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারী অথবা মার্চে মহেশখালী, টেকনাফ ও চকরিয়া উপজেলার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কক্সবাজার সদরে পৌরসভা নির্বাচন হবে ২০১৮ সালে। পৌরসভা নির্বাচনে নতুন আইন পাস করা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী কিছু বিধিমালা তৈরী হবে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানান, কক্সবাজার জেলায় আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। জেলার ৮ টি উপজেলার মধ্যে ৭ টি উপজেলায় এই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় কার্যক্রম চলছে।