মালালা ইউসুফজাই, এক নামে চেনে সারাবিশ্ব। সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেল জিতে রেকর্ড করেছেন। কিশোর বয়সেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত এই পাকিস্তানি। সেই কিশোরী এখন সাবালিকা। তাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে তার পছন্দগুলো। সঙ্কোচ ভেঙে ক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত হচ্ছেন সদ্য তরুণী মালালা।
সম্প্রতি ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মালালার অনেক ব্যক্তিগত বিষয়ই জানা গেল।
বলিউড প্রসঙ্গ উঠতেই সপ্রতিভ মালালার উত্তর- প্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান। তার কথায়, শাহরুখ যা যা করেন, একাবারে নিখুঁত! আর শাহরুখের অভিনীত প্রিয় দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে। বাদশাহ খান মালালার চোখে, অলটাইম ফেবারিট।
জানালেন খ্যাতির বিড়ম্বনার কথাও। লাইট, ক্যামেরা, সাক্ষাৎকার, সাংবাদিকদের অত্যাচারে আড়ষ্ট হয়ে পড়তেন। অবশ্য এখনো ক্যামেরার সামনে আড়ষ্ট হয়ে পড়েন- অকপটে তা স্বীকার করলেন। তার ভাষায়, ‘সত্যি বলতে কী, ক্যামেরার সামনে আমার আজও অস্বস্তি হয়। একটা জড়তা কাজ করে। কেমন যেন সচেতন হয়ে পড়ি, নিজেকে স্বাভাবিক লাগে না।’
ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর চেয়ে ভাষণ দেয়া সহজ বলেই মনে করেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ শান্তি নোবেলজয়ী। কিন্তু, তার আগেও প্রস্তুতি থাকে। সবার অলক্ষ্যে নিজেকে গুছিয়ে নেন। চাপা উদ্বেগ উত্তেজনাও থাকে। মালালা বলেন, ‘জাতিসংঘে ভাষণ দেয়ার আগের রাতে তো ঘুমোতেই পারিনি, ভেতরে এতটাই উত্তেজনা কাজ করছিল, কোনো খাবার মুখে তুলতে পারিনি।’
পড়ার অবসরে গান শোনেন, প্রিয় হানি সিং-এর র্যাপ! কখনো দেখেন ভারতীয় ছবি। আর বন্ধুরা থাকলে কোনও কোনও দিনে যান রেস্তোরাঁয়। বন্ধুদের সঙ্গে শেষ যে ছবিটি দেখেছেন, সালমান খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’। এই চলচ্চিত্র দেখে মুগ্ধতার কথা জানান এভাবে, ‘ছবি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেকক্ষণ তালি দিয়ে গিয়েছি, মুগ্ধতার ঘোর কেটে স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল।’
আর ছবি দেখে প্রাণখুলে হেসেছেন কখন? ‘সেটা পিকু দেখার পর। এখনও মনে পড়লে হেসে গড়িয়ে পড়ি’।
দেখেন, ভারতীয় সিরিয়ালও। পাকিস্তানে যতদিন ছিলেন, কোনও ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বাদ যায়নি। তবে, ব্রিটেনে আসার পর সেই সময়টা আর পান না। তবে নাটক দেখেন।
হিন্দি ছবি ভালোলাগার কারণ হিসেবে জানান, ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে। তবে, দু-দেশের সংস্কৃতির মিল থাকলেও, ভারতীয় সংস্কৃতি অনেক বেশি স্টাইলিশ বলে মনে করেন মালালা। তা খাবারই হোক বা পোশাক। তার প্রিয় খাবার, পাকিস্তানি বিরিয়ানি। সঙ্গে চাই ভারতীয় কোনও পদ। জানালেন, ব্রিটেনে থাকলেও, ভারতীয় ও পাকিস্তানি রান্নাই খেতে পছন্দ করেন। তবে, ইদনীং ভাত খাওয়ার পরিমাণটা একটু কমিয়েছেন। তিনি নিজে যে কিছুই রাঁধতে শেখেননি, তা-ও জানিয়েছেন অকপটে।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিওতে মালালাকে বেশিরভাগ সময়ই লাল পোশাকে দেখা গেছে। তাহলে কি লাল তার প্রিয় রঙ? মালালার উত্তর, বেশি লাল পরলেও প্রিয় রঙ তার পিঙ্ক। কিন্তু, মা-বাবা বলেন, লাল পোশাকেই তাকে বেশি ভালো লাগে। তাই লাল পরেন। তবে, হাতের ঘড়িটা কিন্তু পছন্দের পিঙ্ক রঙেরই।
খুব ঘুরতে ভালোবাসেন। প্রায় নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া হয়। তবে, দুবাইয়ে আলাদা টান আছে। ভালোবাসেন ক্রিকেটও। প্রিয় ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকার। শহিদ আফ্রিদির মারমুখী মেজাজও তাকে টানে।