বিশ্বব্যাপী দুগ্ধপণ্যের চাহিদা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দামের ওপর। চলতি মাসে গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের দ্বিতীয় নিলামে দাম ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমে দুগ্ধপণ্যের টনপ্রতি গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০২ মার্কিন ডলার। যেখানে এ মাসের প্রথম নিলামে দাম ছিল ৩ হাজার ৪৬৭ ডলার। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈশ্বিক দুগ্ধপণ্যের সবচেয়ে বড় নিলামে মূল্যসূচকের এ পরিবর্তন ঘটে। খবর স্টাফ ও নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।
বৈশ্বিক বাজারে দুগ্ধপণ্য বিক্রির জন্য প্রতি মাসে দুবার এ নিলাম বসে। নিউজিল্যান্ডের ফন্টেরা কো-অপারেটিভ গ্রুপ এ নিলামের আয়োজন করে। বিশ্বের বড় সব দুগ্ধপণ্য প্রতিষ্ঠান এ নিলামে অংশ নেয়। এবারের জিডিটি নিলামে ১৯০ জন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠান যোগ দেয়। নিলামে মোট ৩৫ হাজার ৭৪৮ টন দুগ্ধপণ্য বিক্রি হয়েছে, যেখানে এর আগের নিলামে বিক্রি হয় ৩৬ হাজার ২৫৮ টন।
সর্বশেষ নিলামে সবচেয়ে বেশি মূল্যসূচক কমেছে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের (ডব্লিউএমপি)। তিন বছরের মধ্যে আগের নিলামে রেকর্ড পরিমাণ বাড়ার পর এবার ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের মূল্যসূচক ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমে প্রতি টন ৩ হাজার ৯৯ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা গত সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্ন। একই অবস্থা ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের (এসএমপি) ক্ষেত্রেও। গত নিলামে ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের দাম তিন বছরে সর্বোচ্চে পৌঁছায়। নিলামে ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের মূল্যসূচক ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কমে প্রতি টন ২ হাজার ৮৬৭ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যেখানে আগের নিলামে প্রতি টনের বিক্রি ছিল ৩ হাজার ৬৮ ডলারে।
অন্যদিকে আগের নিলামে মাখনের মূল্যসূচক গত মাসের তুলনায় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছিল। মাখনের মূল্যসূচকের নিম্নমুখী ধারা বজায় রয়েছে সর্বশেষ নিলামেও। এ নিলামে দুগ্ধপণ্যটির মূল্যসূচক কমেছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
এ সময় প্রতি টন মাখন বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৬ ডলারে। মূল্যসূচক কমেছে নির্জলা দুধেরও। গত নিলামে দুগ্ধপণ্যটির মূল্যসূচক ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমেছিল। আর এবার দশমিক ৩ শতাংশ কমে প্রতি টন নির্জলা দুধ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৮৬৬ ডলারে।
এসবের বিপরীতে সর্বশেষ নিলামে দাম বেড়েছে ল্যাকটোস, পনির ও রেনেট কেসিনের। এর মধ্যে ল্যাকটোসের মূল্যসূচক দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ৭৮৭ ডলারে। পনিরের মূল্যসূচক ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি টনের দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৬৯ ডলারে। আর রেনেট কেসিনের মূল্যসূচক ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ২৬০ ডলারে।
দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচকের বড় পতনকে বিস্ময়কর বলে মনে করেন নিউজিল্যান্ডের এবিএস ব্যাংকের সিনিয়র রুরাল ইকোনমিস্ট নাথান পেনি। তিনি বলেন, বাজারে প্রত্যাশার বিপরীতে মূল্যসূচকের এমন পতন হয়েছে। ফন্টেরা কো-অপারেটিভের পক্ষ থেকে এবার দুগ্ধপণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ মূল্যসূচক কমিয়ে আনতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, অতিরিক্ত সরবরাহ থাকলেও চাহিদার কোনো পরিবর্তন হয়নি।