দিনাজপুরে রসুন চাষে বাম্পার ফলনের আশা চাষীদের

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১২-২৮ ১০:৩৩:২৪


কৃষি সমৃদ্ধ দেশের অন্যতম জেলা উত্তরের জনপদ দিনাজপুর।দেশের যে সকল স্থানে রসুন আবাদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি  তার মধ্যে অন্যতম দিনাজপুর। গত কয়েকবছর ধরে আবহাওয়া রসুন চাষের উপযোগী থাকায় ভালো দাম পাওয়ায় এটি আবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ এবং কৃসকরা এবার জেলায় রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে প্রায় পৌনে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলায়। খানসামা উপজেলায় আবাদ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে। চিরিরবন্দরে আবাদ হয়েছে ৪৮০ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। আকস্মিক কোনও দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।

চিরিরবন্দর উপজেলায় যেসব স্থানে রসুনের আবাদ বেশি হয় তার মধ্যে সাতনালা, বিন্যাকুড়ি, নশরতপুর, ফতেজংপুর, সাইতাড়া, আলোকডিহি, তেতুঁলিয়া, ভিয়াইল গ্রাম অন্যতম।

এ এলাকার কৃষকরা জানান, রসুন চাষে শ্রমিক ও চাষ বাবদ প্রতি একর জমিতে খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। আর বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ বাবদ খরচ হয় আরও ৩০ হাজার টাকা। এতে করে প্রতি একরে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে একর প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ রসুন পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে হলে দাম পাওয়া যায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকার মতো। রসুন ঘরে তোলা, বাছাই ও বাজারজাতকরণে আরও প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলেও লাভ থাকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবে এই দামে রসুন বিক্রি করতে হলে মৌসুমের শুরুতেই নয়, একটু অপেক্ষা করতে হয়।

কৃষকরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন রসুন চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।

চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, এবারে রসুনের ভাল দাম পেয়েছেন কৃষকরা। তাই অধিক লাভের আশায় এবারও তারা এটি চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। তাছাড়া এবার আবহাওয়া ভালো রয়েছে। প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ না হলে এবাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা যায়।

কাহারোল উপজেলার কৃষক মিজানুর রহমান জানান, এ বছর তার জমিতে রসুন বীজের অঙ্কুরোদগমও ভালো হয়েছে।এ বছর রসুন বিক্রি করে ভালো লাভবান হবো বলে আশা করছি।

কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, রসুন আবাদে তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। সামান্য সেচ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সার ও কীটনাশক দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া এই এলাকার মাটি রসুন আবাদের জন্য ভালো।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমানে সেখানকার কৃষকদের কাছে রসুন প্রধান অর্থকরী ফসল। তাই দিন দিন তারা এর আবাদে ঝুকছেন। কৃষকরা যেন কোনও ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয় সেজন্য কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তৌহিদুল ইকবাল জানান, ভালো ফলন হওয়ায় জেলায় রসুনের ব্যাপক আবাদ হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় মশলা জাতীয় ও লাভজনক এই ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এটি বজায় থাকলে রসুনের বাম্পার ফলন হবে। তখন নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হবে।