নারায়ণগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জে এক দফা বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম আরো । মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া ভোজ্যতেলটির দাম পাইকারিতে কেজিপ্রতি ১০ টাকা আর মণে বেড়েছে প্রায় ৪০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে।
বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি সয়াবিন তেল বেচাকেনা হয় ৯১-৯২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে একই সয়াবিন তেল বেচাকেনা হয়েছে ৮২-৮৩ টাকা দরে। সে হিসাবে ভোজ্যতেলটির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আর মণপ্রতি বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার ৬৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছে ৩ হাজার ২৮০ টাকা দরে। সে হিসাবে মণে বেড়েছে ৪০০ টাকা। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের পাশাপাশি বেড়েছে পাম অয়েলের দামও। এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে প্রতি কেজি পাম অয়েল বেচাকেনা হয় ৭২-৭৪ টাকায়, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৮ টাকা আর মণে বেড়েছে ৩২০ টাকা।
নিতাইগঞ্জের সয়াবিন তেলের ব্যবসায়ী দিলিপ রায় জানান, বৈশ্বিক বাজারে সয়াবিন তেলের কাঁচামালের দাম বেশ বেড়েছে। যে কারণে মিলগেট থেকেও সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই মিলগেট থেকে দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। যে কারণে আমাদের বেশি দামে কিনে পরিবহন খরচ মিলিয়ে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শীতের সময় পাম অয়েল জমাট বেঁধে যাওয়ায় ভোজ্যতেলটির চাহিদা কমে যায়। এর বিপরীতে বাজারে সয়াবিন তেলের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই এ সময়ে সয়াবিনের দাম কিছুটা বেশি থাকে। তবে এবার স্বাভাবিকের তুলনায় দাম বেশি বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আরেক ব্যবসায়ী সোলাইমান মিয়াও একই কথা জানান। তিনি বলেন, মিলগেট থেকে দাম বৃদ্ধি করলেও এটির সঠিক কোনো কারণ বোঝা যাচ্ছে না।
সয়াবিন তেলের পাশাপাশি নিতাইগঞ্জে দাম বেড়েছে সব ধরনের ডালের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আস্ত মসুর ডাল। এক-দুই সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মসুর ডালের দাম বেড়েছে ৪৫০ টাকা। আর কেজিতে বেড়েছে ৯ টাকা।
এছাড়া প্রতি কেজি ভাঙা মসুর ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। একই ডাল ১০-১২ দিন আগে বেচাকেনা হয়েছিল ৪২ টাকায়। দেশী মসুর ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। একই ডাল এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছিল ৮৪ টাকায়। ভারতের দিল্লি সুপার ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১১২ টাকা কেজি দরে। একই ডাল আট-দশ দিন আগে বেচাকেনা হয়েছে ১০৯ টাকা কেজি দরে। এছাড়া দাম বেড়েছে অ্যাংকর, খেসারি, মুগ ও মাষকলাইয়েরও।
ডাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি সংকটের কারণে মিল থেকে ডালের সরবরাহ কম হচ্ছে। এ কারণে বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। তবে প্রতি বছর এ সময়ে ডালের দাম কিছুটা বাড়ে বলেও জানান তারা।