চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১২-৩১ ০৯:৪২:৫৮


দেশে নিত্য প্রয়োজনীয়  ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে আরো এক দফা বাড়লো চিনির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনিতে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। সেই হিসাবে পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মিলগেট থেকে চিনির দাম বাড়িয়ে দেয়ায় পাইকারিতেও দাম বেড়েছে।

নিতাইগঞ্জ বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারিতে প্রতি বস্তা চিনি বেচাকেনা হচ্ছে ২ হাজার ৯৫০ টাকায়; যা এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ টাকায়। আর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চাহিদার অর্ধেকের বেশি চিনি সরবরাহ করা হয় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত সিটি কোম্পানির তীর সুগার মিল এবং সোনারগাঁর মেঘনাঘাটে অবস্থিত মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ সুগার মিল, ইগলু চিনিসহ ছোট-বড় কয়েকটি সুগার মিল থেকে। তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিনি সরবরাহ করে তীর ও ফ্রেশ। এক কথায় চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হয় এ দুটি মিল থেকে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এক সপ্তাহ ধরে এ দুই মিল থেকেই চিনির দাম দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে।

নিতাইগঞ্জের গোপীনাথ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী নারায়ণ চন্দ্র শাহ বলেন, সরকার  চলতি  অর্থবছরের বাজেটে চিনি (পরিশোধিত ও অপরিশোধিত) আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করে। বাজেটের পর চিনির দাম না বাড়লেও এখন এসে তা বাড়ছে। বাজেটের এতদিন পর চিনির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে যুক্তি হিসেবে তিনি জানান, বাজেট ঘোষণার আগে থেকেই মিলগুলোয় বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত চিনি আমদানি করা ছিল। যে কারণে বিগত সময়ে চিনির দাম বাড়েনি। কিন্তু নতুন করে আমদানি করা চিনির কাঁচামালের (অপরিশোধিত চিনি) ওপর শুল্ক আরোপিত হওয়ায় এখন দাম বাড়ছে।

নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীদের পক্ষে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে নারায়ণ চন্দ্র শাহ আরো জানান, নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীরা ট্রেডিং ব্যবসা করেন। এখান থেকে (নিতাইগঞ্জ) দাম বাড়ানো বা কমানোর কোনো সুযোগ নেই। মিলাররা যে দাম বেঁধে দেন, তাদের সেই দামে কিনতে হয়। সঙ্গে পরিবহন খরচ সমন্বয় করে ২০ থেকে ৩০ পয়সা লাভে পণ্য বেচাকেনা করে থাকেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

এদিকে শুল্ক বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে চিনির দাম বৃদ্ধি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী। নিতাইগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির বলেন,  চিনির দাম হঠাৎ করেই কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়ে গেছে। সরকার বাজেট ঘোষণা করেছে প্রায় ছয় মাস আগে। কিন্তু ছয় মাস পর এসে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর নামে সুগার মিলগুলো বাজারে চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

এদিকে পাইকারিতে চিনির দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। নগরীর বউবাজার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের হুমায়ুন স্টোরের মালিক হুমায়ুন জানান, বাজার থেকে এক বস্তা চিনি দোকানে আনতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা খরচ হয়। এছাড়া এক বস্তা চিনি বিক্রি করতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ দিনের মতো সময় লাগে। যে কারণে দোকানিরা খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দামে চিনি বিক্রি করেন।