পাটকল শ্রমিকরা মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে নরসিংদীতে পঞ্চম দিনের মতো পাটকল শ্আমরণ অনশন শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে এ কর্মসূচিতে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের বৃদ্ধা বাবা-মাসহ শিশু সন্তানরা।
এদিকে বেশ কয়েকদিন ধরা চলা আন্দোলনে বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে হারুনুর রশিদ ও দুলাল মিয়া নামে দুই শ্রমিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ক্রমান্নয়ে দুর্বল হয়ে পড়া শ্রমিকদের। শ্রমিক আন্দোলনের ফলে মিলের সকল ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বাংলাদেশ পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের ডাকে ইউনাইটেড-মেঘনা-চাঁদপুর (ইউএমসি) জুট মিলের শ্রমিকরা মিল গেটের সামনে এ আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। অনশনে ইউএমসি জুট মিলের স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছেন।
এ কর্মসূচিতে ইউএমসি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শফিকুল ইসলাম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কামাল মিয়া, কাউছার আহাম্মেদ, সুমন খন্দকার, জাকির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, নন সিবিএ পরিষদের সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান, মোশারফ হোসেন, কাউয়ুম প্রধান, শামসুল আরেফিন, ইসা হাবিব রিপন সরকারসহ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত রয়েছেন।
ইউএমসি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চলছে। আমরণ অনশনে আমাদের বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রশাসন বা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো খোঁজখবর নেয়নি।
এর আগে একই দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন শ্রমিকরা। টানা পাঁচদিন আন্দোলনের পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করে কাজে যোগ দেন তারা। শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গত ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় ওই দিন ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবারও আমরণ অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।