ফুলের চারা বিক্রি করে কৃষকের মুখে হাসি

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০১-০২ ১৩:৩৪:৫৭


কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকার নার্সারিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন প্রকার ফুলের চারা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নার্সারিগুলোতে ফুলের চারা বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। ফুলের চারা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।

জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, নার্সারিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালেন্ডুলা, পাপিয়া, সূর্যমুখী, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদে লাল মিশানো জাম্বো গাঁদা, বড় ইনকা গাঁদা, ছোট চায়না গাঁদা প্রভৃতি।

মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়িয়া সড়কের পাশে অবস্থিত লিমন নার্সারির মালিক পারভেজ হাসান জয় বলেন, এবার শীত মৌসুমে এক বিঘা জমিতে প্রায় ১৫ প্রজাতির ফুলের চারা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের গাঁদা, রক্ত গাঁদা, কুইন সুপার গাঁদা, বারমাসি গাঁদার চারা ১০ টাকা পিস করে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া হাইব্রিড জাতের ডালিয়া খুচরা ১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ১৫ টাকা, স্নোবল ২০ টাকা, ক্যালেন্ডুলা ১০ টাকা, জিনিয়া ১০ টাকা, ফ্লোস ২০ টাকা, গ্যাজোনিয়া ১০ টাকা, ডাইনথাজ ১০, রঙ্গমিক্স ১০ টাকা, দোপাটী ১০, স্টার ১০, পাপিয়া ২০, সিলভিয়া ১০, ফায়ার বল ১৩০, অপূর্বিয়া ৮০ টাকা, পানচাটিয়া ১৫০ টাকা, রক্তজবা ৮০ টাকা, রঙ্গন ৮৫ টাকা, চায়না টগর ২০ টাকা, কসমস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

হাইব্রিড গোলাপের মধ্যে তাজমহল গোলাপ খুচরা ১০০ টাকা, রাণী গোলাপ ১০০ টাকা, বিশ্ব সুন্দরী গোলাপ ১০০ টাকা, ইরানী গোলাপ ২৫ টাকা, কাঁচা হলুদ, ঘিয়া, সাদা, জরিনা গোলাপ প্রকার ভেদে একশো’ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশি জাতের গোলাপ ১০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

নার্সারির মালিক পারভেজ হাসান জয় বলেন,‘এইসব ফুলের চারা ও বীজ যশোর গদখালী, ঝুমঝুমপুর, বাসুদেবপুর, বগুড়ার মহেস্থান গড় ও বরিশাল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এ বছর মোকাম থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার চারা কেনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফুলের চারা বিক্রি হয়েছে।  এখনও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফুলের চারা বিক্রি হবে। আশা করছি ভালো বেচাকেনা হবে।’

তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় ফুলের চারা তেমন বিক্রি হয় না। তবে শীত মৌসুমে ফুলের চারা বিক্রি বেশি হয়। অক্টোবর থেকে ফুলের চারার জন্য জায়গা প্রস্তুত শুরু করেছি। এরপর চার মাস শীতকালীন ফুল বিক্রি হয়। ফুল চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখান থেকে সরকারিভাবে কোনও বীজ পাইনি। বীজ পেলে ফুলের চারা বিক্রি করে আরও লাভবান হাওয়া যেত।

ফুলের চারার খুচরা বিক্রেতা মো. আমজাদ হোসেন বলেন,‘আমরা নার্সারি থেকে পাইকারি ফুলের চারা সংগ্রহ করে শহর এলাকায় বিক্রি করি। বিক্রি ভালো হলে লাভ বেশি হয়। বিক্রি খারাপ হলে লাভ কম হয়। তবে প্রতিদিন চারা বিক্রি করে দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। এতে আমাদের সংসার ভালোই চলে।’

জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সেক্রেটারি আশরাফুল গণি সান্টু বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় ৪১টি নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে বিভিন্ন ফুল, কাঠ ও ফলের চারা উৎপাদন করা হয়। তবে নার্সারি মালিকরা সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা পায় না। এমনকি কোনও ঋণ সুবিধাও পায় না। সব কিছুই নিজেদের অর্থায়নে করতে হয়।’

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন,‘কুষ্টিয়ায় অনেক বেসরকারি নার্সারি রয়েছে। তবে সেগুলো কৃষি বিভাগের আওতার বাইরে। এছাড়াও জেলার একটি সরকারি নার্সারি রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন জাতের চারা উৎপাদন করা হয়। তবে সেটি আকারে অনেক ছোট। সরকারিভাবে এখনও বড় কোনও নার্সারি গড়ে উঠেনি।

সানবিডি/এনজে