সদ্য বিদায়ী বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে । এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
বিগত ২০১৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। তবে ২০১৯ সালের রেমিট্যান্স পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ প্রবাসীরা গত ডিসেম্বরে ১৬৮ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিদায়ী ২০১৯ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে।’
সরকারের দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগের কারণে দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছ বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, চলতি বছর ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক খাত, পুঁজিবাজার, রাজস্ব আয়, রফতানি প্রবৃদ্ধিসহ অর্থনীতির সব সূচক উল্টোপথে হাঁটলেও বছরজুড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল উর্ধমুখী। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
২০১৯ সালের প্রথম থেকেই বাড়তে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। ওই বছরের জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসে ১৫৯ দশমিক ৭২ কোটি মার্কিন ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ১৩১ দশমিক ৭৭, মার্চে ১৪৫ দশমিক ৮৬ ও এপ্রিলে ১৪৩ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার। এরপর মে মাসে আবার রেকর্ড পরিমাণ ১৭৪ দশমিক ৮১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে।
ওই বছর জুনে ১৩৬ দশমিক ৮২ কোটি মাকির্ন ডলার, জুলাইয়ে ১৫৯ দশমিক ৭৬ কোটি মার্কিন ডলার, আগস্টে ১৪৪ দশমিক ৪৭ কোটি মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৪৭ দশমিক ৬৯ কোটি মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৬৩ দশমিক ৯৬ কোটি মার্কিন ডলার, নভেম্বরে ১৫৫ দশমিক ৫২ কোটি মার্কিন ও সবশেষ ডিসেম্বর মাসে ১৬৮ দশমিক ৭০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। বছর শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৮৩২ কোটি ৫১ লাখ মার্কিন ডলার। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।
বিভিন্ন বছরভিত্তিক রেমিট্যান্স: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্জিকা বছর হিসাবে ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার ও ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
অন্যদিকে অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। সবশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৩১ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো যথাক্রমে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।সূত্র-সারাবাংলা
সানবিডি/এনজে